সিত্রাংয়ের প্রভাবে বিদ্যুৎহীন অর্ধ লাখ পরিবার
শরীয়তপুরে ঘুর্নিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে জেলায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিত হয়নি। এখনো প্রায় অর্ধ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাতের মধ্যে ওই অর্ধ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুতের লাইন চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রকৌশলীরা।
শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থানে সারা দেশের ন্যায় ঘুর্নিঝড় সিত্রাং সোমবার সকাল থেকে তার প্রভাব শুরু করে।বিকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ঝড়োবাতাস হয়। এতে বিভিন্ন গ্রামের কাচা,আধাপাকা ঘর ও গাছপালা ভেঙ্গে পরে। গাছ পরে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিদ্যুৎ লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
বড় বড়গাছপালা,বাঁশঝাড় উপড়ে ও ভেঙ্গে পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে ৩৬টি খুটি ভেঙ্গে পরেছে। হেলে পরেছে ৪৫টি খুটি,সঞ্চালন লাইনের ইন্সুলেটর ভেঙ্গেছে ৭৪ টি,ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে ২৮ টি, ৪৭০টি মিটার ভেঙ্গেছে,৩১৫ টি স্থানে তার ছিড়ে পরেছে,১ হাজার ৬৫০টি স্থানে সঞ্চালন লাইনের ওপর গাছ ও বাঁশ ভেঙ্গে পরেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১২৫ টি টিম মাঠে কাজ করছেন। মঙ্গলবার দিনভর কাজ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মিরা পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের টোলপ্লাজা,শেখ রাসেল সেনানিবাস,৮টি ৩৩ কেভি ফিডার,১৪টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র, ৭৪টি ১১ কেভি ফিডার চালু করেছেন। জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক রয়েছেন ৩ লাখ ৪২ হাজার ৩৫০ জন। যার মধ্যে ৪৬ হাজার ৫০০ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যার অধিকাংশই গ্রামের।
আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভোজেশ্বর উপজেলায় ও ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখনো বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে উপজেলা ও ইউনিয়ন গুলোতে। বাজারের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে জ্বলছে মোমবাতি ও হেরিকেনের আলো। বিদ্যুৎ না থাকায় ইউনিয়ন গুলোতে তৈরি হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ।
নড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী মজিদ শেখ ও ভোজেশ্বর পাঁচক ইউনিয়নের বাসিন্দা আক্তার হোসেন ঘোড়াপী বলেন, আমাদের এলাকায় তিন দিন যাবত বিদ্যুৎ নেই। বাড়িতে কুপি জ্বালিয়ে বাড়তি খরচ হচ্ছে ভোগান্তি হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঝামেলা হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ও বাড়িতে রাখা ফ্রিজের মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জুলফিকার রহমান বলেন, ঝড়ের তিব্রতার কারনে শতভাগ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে জেলার বিভিন্ন স্থানে। প্রত্যন্ত অঞ্চল মিলিয়ে আনুমানিক প্রায় অর্ধ লাখ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। আশা করছি রাতের মধ্যেই শতভাগ হয়ে যাবে। দিনরাত মিলিয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এএজেড