রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে চলছে প্রস্তুতি
রংপুরের ৮ জেলা নিয়ে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আগামী ২৯ অক্টোবর। আর এই সমাবেশ ঘিরে চাঙা হয়ে উঠেছে মাঠপর্যায়ের ঝিমিয়ে পড়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিদিনই ধারাবাহিক সভা-সমাবেশ চলছে বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা, শহর ও গ্রামে।
বিভাগীয় সমাবেশের আগে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরও উজ্জীবিত করার কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা।
প্রাথমিকভাবে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে রংপুর প্রশাসন। এখানেই স্মরণকালের সর্বোচ্চ জনসমাগম ঘটবে বলে প্রত্যাশা বিএনপি নেতাদের। যদি কোনো কারণে প্রশাসন ঈদগাহ মাঠের অনুমতি বাতিল করে তাহলে বিকল্প স্থানও নির্ধারণ করে রাখায় চাঙা হয়ে উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ছাত্রলীগের বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। বিএনপির সমাবেশের দুদিন আগে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে বিভাগীয় ছাত্র সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচার ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে রংপুর মহানগরীতে বড় আকারের শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠন। এ নিয়ে রংপুরের রাজনীতিতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এদিকে নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দেশের বিভিন্ন স্থানে গুলিতে বিএনপির ৫ নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুরে আগামী ২৯ অক্টোবর বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এই সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে রংপুর মহানগরীসহ বিভাগের ৯ সাংগঠনিক জেলা, বিভিন্ন উপজেলা, গ্রামের বাজার-পাড়া-মহল্লাগুলোতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সভা করেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। এতে উপস্থিত ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
কেন্দ্রীয় ও বিভাগীয় কৃষকদলের নেতা শাহ নেওয়াজ লাবু বলেন, রংপুরের গণসমাবেশে কৃষকদলের বিপুল উপস্থিতি থাকবে। এজন্য বিভাগের ৯টি জেলায় সভা করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নুর হাসান সুমন ও জেলা সম্পাদক শরীফ নেওয়াজ জোহা বলেন, গণসমাবেশ সফল করার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) থেকেই রংপুরের রাজপথে ছাত্রদল অবস্থান করবে।
রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদ এবং মহানগর বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার তুহিনসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতারা বলেন, রংপুরে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম হবে। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক জনসংযোগ চালানো হচ্ছে।
রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, মাহমুদ টুকু এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, গণসমাবেশ সফল করার ব্যপক প্রস্তুতি রয়েছে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর সমাগম হবে।
গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন করেন বিএনপি রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
এদিকে বিএনপির গণসমাবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি ও সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সভা-সমাবেশ করলে আমাদের আপত্তি নেই। যদি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয় তাহলে নিশ্চয়ই আমরা তা প্রতিহত করব। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামা হবে।
এসজি