সিত্রাংয়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু, এলাকায় শোকের মাতম

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হেসাখাল এলাকায় ঝড়ে গাছ পড়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের মাতম বইছে। নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিবেশ।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ঝড়ে ঘরের উপর গাছ পড়ে নিহত হন হেসাখাল খামার পাড়া গ্রামের প্রবাস ফেরত নাজিম উদ্দিন (২৮), তার স্ত্রী সাথী আক্তার (২৪) এবং তাদের শিশু কন্যা লিজা (৪)। রাতে প্রবল বেগে বাতাস শুরু হলে তাদের ঘরের উপর একটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ওই পরিবারের তিনজনেরই মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে হেসাখাল গ্রামের খামার পাড়ায় গিয়ে চোখে পড়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় শোকে বিহ্বল স্বজনেরা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও মানুষজন ছুটে আসছেন নিজাম উদ্দিনের বাড়িতে। স্বজনদের কান্নায় তাদের চোখও ছলছল করে উঠে।
স্থানীয়রা জানান, প্রবাস থেকে ফিরে নতুন ঘর করেছেন নাজিম উদ্দিন। মাত্র ৭দিন পর নতুন বাড়িতে উঠার কথা ছিল তার। কিন্তু ঘরে উঠা আর হলো না। সোমবার রাতে সিত্রাংয়ের ঝড়ো হাওয়ায় নিজাম উদ্দিনের পুরোনো ঘরে ভেঙে পড়ে বিশাল রেইন-ট্রি গাছ। ঘুমন্ত নাজিম উদ্দিন, তার স্ত্রী সাথী আক্তার এবং চার বছরের শিশু কন্যা চাপা পড়ে ঘরের নিচে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রাণ হারায় একটি পরিবার।
নাজিম উদ্দিনের ভাই জামাল উদ্দিন বলেন, মাত্র এক মাস আগেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন নাজিম। স্ত্রী-কন্যাকে নতুন ঘরে তুলে দিয়ে আগামী মাসেই আবার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তার। সোমবার রাতে ঝড় শুরু হওয়ায় নাজিম দ্রুত বাড়ি ফিরে স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে ঘুমিয়েছিলেন। আচমকা ঘরের পাশের বিশাল গাছটি উপড়ে পড়ে চাপা দেয় ঘরটিকে। এতে তারা তিনজনই মারা যান।
হেসাখাল ইউপি চেয়ারম্যান ইকবার বাহার মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রচণ্ড ঝড়ে গাছ পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার স্বচ্ছল এই পরিবারটির প্রতি সমবেদনা জানানো ছাড়া কিছুই করার নেই।
তিনি আরও বলেন, ঝড়ে তিনজনের মৃত্যু ছাড়াও সিত্রাংয়ের প্রভাবে নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে ক্ষতির শিকার হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি।
এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লায় আঘাত হানে সিত্রাং। রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কুমিল্লা অতিক্রম করা কালে এই ঘূর্ণিঝড় ক্ষয়ক্ষতি করেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও স্থাপনার।
এসজি
