ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের বেশকিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এমনকি কয়েকটি ঘরবাড়ির টিন-চাল উড়ে গেছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় এ ঘটনা ঘটছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধেয়ে আসায় ক্যাম্পগুলোতে বসবাসকারীদের সর্তক থাকতে মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্যাম্পে সাড়ে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।
এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সোমবার বিকালে কক্সবাজারের আরআরআরসি কার্যালয়ে সার্বিক বিষয়ে একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, এপিবিএন ও আইএনজিওসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরআরআরসি কার্যালয় জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ক্যাম্পের স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ মজবুত সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে ক্যাম্পে সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রেডক্রস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দমকল বাহিনী বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মী বাহিনীসহ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবীও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সর্তক থাকতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রত্যেক ক্যাম্পে সিআইসির নেতৃত্বে একটি করে দুর্যোগ মোকাবিলা কমিটি করা হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্যাম্পে সাড়ে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে উল্লেখ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মূলত আমরা ভয়ে আছি, ভারী বৃষ্টিপাত হলে ক্যাম্পে ভূমি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। ক্যাম্পে অতি ঝুঁকিপূর্ণদের চিহ্নিত করে কাল থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নোয়াখালীর ভাসানচর ও কক্সবাজারের শিবিরে কিছু ঘরবাড়ির টিন-চাল উড়ে গেছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, সব রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে কমিটি করা হয়েছে। মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি ক্যাম্পের দুর্বল ঘরগুলো বাঁশ ও রশি দিয়ে মজবুত করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সকালে ক্যাম্পে মাইকিং করে সবাইকে সর্তক করা হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের স্কুল এবং খাদ্য বিতরণ সেন্টারে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. ইউনুছ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত আনতে পারে এমন আশঙ্কার খবর ক্যাম্পে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ক্যাম্পে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পাশাপাশি সকাল থেকে সব ক্যাম্পে মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের সর্তক থাকতে বলা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, স্থানীয়দের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দুর্যোগে অবহেলা না করে নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য মাইকিংসহ নানাভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চল থেকে লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এসজি
