ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি, ভোলায় নৌ চলাচল বন্ধ
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোলাসহ ভোলার উপকূলীয় অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টির পরিমাণও। বন্ধ রয়েছে সব প্রকার নৌযান চলাচল।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সবশেষ অবস্থান জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি রবিবার (২৩ অক্টোবর) মধ্য রাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কি.মি. দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কি.মি. দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে জানায় ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কি.মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ভোলা ও আশপাশের জেলাগুলোর নৌ চলাচল।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকেই ভোলার উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতেরও খবর পাওয়া গেছে। তবে সোমবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের পরিমাণও কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার বিচ্ছিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ১৩ হাজার ৬৬০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। জেলার ৭০টি ইউনিয়ন ও ৭টি উপজেলায় একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
এসজি