হিলিতে আবারও বাড়ল পেঁয়াজের দাম, বিপাকে ক্রেতারা
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ার ফলে কয়েকদিন দাম কমতির দিকে থাকে। কিন্তু ভারতে দাম বৃদ্ধির অজুহারে আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪-৭ টাকা করে বেড়েছে। এদিকে আবারও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় পেঁয়াজ কিনতে এসে বিপাকে পড়েছেন পাইকার ও নিম্নআয়ের মানুষজন।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে আগে নাসিক, ইন্দোর ও নগর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। ইন্দোর জাতের ছোট আকারের পেঁয়াজ বর্তমানে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা আগে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। একই জাতের বড় আকারের পেঁয়াজ আগে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ টাকায়।
হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, পেঁয়াজের বাজার যে উঠানামা করছে তাতে করে পেঁয়াজ কেনার সাহস পাচ্ছি না। সপ্তাহের প্রথমদিকে পেঁয়াজের দাম কমতে কমতে ২৬ টাকায় নেমেছিল। এ কারণে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের যে চাহিদা ছিল তা পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু সপ্তাহের শেষের দিকে এসে আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। একলাফে কেজিতে ৪-৭ টাকা করে বেড়েছে। এখন কী দামে কিনব আর কী দামে বিক্রি করব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। কিন্তু মোকামে সেভাবে দাম বাড়ছে না বলে তারাও পেঁয়াজ কিনতে চাইছে না।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ভারতের ব্যাঙ্গালুরু অঞ্চলে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত নষ্ট হয়ে পেঁয়াজের সরবরাহ খানিকটা কমেছে। এতে করে ভারতের বাজারেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে বলে দেশের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি।
তিনি বলেন, সপ্তাহের প্রথম দিকে ভারত থেকে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনলেও দেশের বাজারে চাহিদা না থাকায় ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছিল। এ ছাড়া গরমে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পেঁয়াজ কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিল আমদানিকারকরা। এতে করে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুনতে হওয়ায় অনেকে পেঁয়াজের আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। দেশের বাজারে পেঁয়াজের সররবাহ খানিকটা কমায় ও চাহিদা বাড়ায় আবারও পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে মণপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা করে বেড়েছে। আগে প্রতি মণ ১২০০-১৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ১৬০০-১৭০০ টাকা হয়েছে। এর ফলে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ায় দামের উপর প্রভাব পড়ছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, সপ্তাহের শেষের দিকে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি খানিকটা বেড়েছে। সপ্তাহের শুরুর দিকে বন্দর দিয়ে ১৫-২০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩০-৩৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ৩৬টি ট্রাকে ১ হাজার ৪৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে আমদানি বন্ধ ছিল। আজ শনিবার আবারও বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এ ছাড়া গত বুধবার ৩১টি ট্রাকে ৯০০ টন ও মঙ্গলবার ১৯টি ট্রাকে ৫৪২ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
এসজি