বেপরোয়া গতিতে বেড়েছে শীতকালীন সব্জির দাম
রংপুর জেলার হাটবাজারে লাগামহীন ভাবে শীতকালীন আগাম সব্জির বেপরোয়া গতিতে বেড়েছে দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে খোলাবাজারে চিনির দাম। সেই সাথে বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। চাল, ডাল ও মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও শীলকালীন আগাম সবজিতে মিলছে না স্বস্তি।
রংপুর নগরীসহ জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্যাকেটজাত চিনি ৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৬ থেকে ১০০ টাকায়। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, প্যাকেট যেহেতু এক কেজির নিচে সচরাচর পাওয়া যায় না, তাই যারা কম পরিমাণে কিনছেন তাদের বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিতে হচ্ছে।
প্যাকেট আটা গত সপ্তাহের মতো ৬০ টাকা, খোলা আটা ৫৫ টাকা এবং ময়দা ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আগের মতোই মসুর ডাল (মাঝারি) ১১০-১২০ টাকা, চিকন ১৩৫-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৪০-১৫০ টাকা, বুটের ডাল ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি টমেটো ১৫০-১৬০ টাকা, গাজর ১৫০-১৬০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, শসা ৪৫-৫০ টাকা, চিকন বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, পেঁপে ২০-২৫ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৮-১০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০-৬০ টাকা কেজি, শুকনা মরিচ ৪৮০-৫০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩৫- ৪০ টাকা, ধনেপাতার দাম বেড়ে ৮০-১২০ টাকা কেজি, কাঁচকলা হালি ২৫-৩০ টাকা, ঢেঁড়সের দাম কমে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, কচুর বই ৪০-৪৫ টাকা, বরবটি ৫৫-৬০ টাকা, পটল ৪৫-৪৫ টাকা, প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৪০-৪৫ টাকা, চাল কুমড়া ৩৫-৪০ টাকা, ঝিঙে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, কাঁকরোল ৩৫-৪০ টাকা, সিম ১২০-১১৩ টাকা, মুলা ৩০-৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৫০-৫৫ টাকা এবং ফুলকপি ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আদা ১০০-১২০ টাকা ও রসুন ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সব ধরনের শাকের আটি পাওয়া যাচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। খুচরা বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতো ২৪-২৫ টাকা, শিল আলু ৪৫-৫০ টাকা, ঝাউ আলু ৫০ টাকা এবং সাদা আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিাক্র হচ্ছে। হঠাৎ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর লালবাগ বাজারে সবজি কিনতে আসা রিপন বলেন, বাজারে একটার দাম কমতে থাকে তো আরেকটার দাম বাড়ে। শীতকালীন আগাম সবজির দামও অস্বাভাবিক। এ অবস্থায় স্বস্থি মিলছে না। সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগি ৫-১০ টাকা কমে ১৬০-১৬৫ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি আগের মতোই ২৭০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৪০-৪৫০ টাকা এবং পাকিস্তানি লেয়ার ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৬৪০-৬৫০ এবং খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গবাদী পশুর খাদ্যের দাম। প্রতি বস্তা ভুসিতে১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর লালবাগ বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সোলেমান মিয়া বলেন, হঠাৎ করে বাজারে গরুর সংকটে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়তি দামে গরু কেনার কারণে মাংসের দাম বাড়াতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন গবাদী পশুর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু-খাসি বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে মাংসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকার মাংস ব্যবসায়ীরা তাদের মনগড়া দরে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী মো জামিল বলেছেন, আগে এক কেজি গরুর মাংস ৫০০-৫৫০ টাকায় কিনে রান্না করে ১২০ টাকা বাটি বিক্রি করতাম। এখন বাড়তি দামে কিনে আগের মতোই বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসার লোকসান হচ্ছে প্রতিদিন।গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজি প্রতি ১-২ টাকা কমেছে। স্বর্ণা (মোটা) ৪৬-৪৮ টাকা থেকে কমে ৪৫-৪৬ টাকা, বিআর২৯ দুই টাকা কমে ৫৫ টাকা, বি২৮ আগের মতোই ৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট ৬৫ টাকা এবং নাজির শাইল ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।বাজারে মাছের দামের পরিবর্তন নেই। অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরণের মাছের দাম।
রংপুরের জেলাপ্রশাসক মোঃ আসিফ আহসান জানিয়েছেন, খোলা সয়াবিন তেল,ও খাসিও গরুর মাংসের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রেনে আনার জন্য জেলার হাটবাজার গুলোতে নির্বহী ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রম্যমান কোর্ট অভিযান ও মনিটরিং পরিচালনা করা হচ্ছে।ব্যবসায়ীরা অভীযানের কারনে খাদ্য সামগ্রীর বেশী দাম বাড়াতে সাহস পাচ্ছেনা।
এএজেড