অপহরণের ১১ দিনেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী

ফেনীর সোনাগাজী থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রী ফাতেমা আক্তার (১৭) ১১দিনেও উদ্ধার হয়নি। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গত ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ছাত্রীটি বাড়ি থেকে বের হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে উপজেলার আউরারখিল এলাকা থেকে অপহরনের শিকার হয়।
এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা বগাদানা ইউনিয়নের আউরারখিল এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব উদ্দিন (২০), তার বাবা জসিম উদ্দিন, মা হোসনে আরা বেগম, চাচা মহি উদ্দিন, মামা শাহ আলম, সহযোগী আরাফাত হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই জনকে আসামী করে অপহরণের অভিযোগে সোনাগাজী মডেল থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, অপহরনের শিকার ছাত্রীটি উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে সজিব উদ্দিন নামে এক বখাটে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তার মা-বাবাকে জানায়। তারা প্রতিকার চেয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তার বাবা-মাকে অবহিত করলে, তারা উল্টো ওই ছাত্রীকে সজিবের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সজিব আরও বেপরোয়া হয়ে তাকে অপহরণের হুমকি দেয়। পরিবারের সদস্য ও সহপাঠিদের যোগসাজসে গত ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ছাত্রীটি অতিরিক্ত পরীক্ষার খাতায় স্বাক্ষর করাতে বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনের সড়কে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
এসময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে সজিব তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে ছাত্রীর পাশের দাঁড়িয়ে গাড়ীতে ওঠতে বলে। ছাত্রীটি গাড়ীতে ওঠতে অস্বীকার করে চিৎকার দিতে চাইলে তাকে টেনে-হেচড়ে জোরপূর্বক গাড়ীতে তোলে মুখ চেপে ধরে অচেতন করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে বখাটে সজিবের বাড়ি লোকজন পালিয়ে যায়। মামলার বাদী ছাত্রীর মা জানায়, ১১দিনেও মেয়েটিকে উদ্ধার কিংবা কোন খোঁজ না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। বিদেশে অবস্থানরত তার বাবাও মেয়ের চিন্তায় অসুস্থ হয়ে গেছেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. খালেদ হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের কললিষ্ট সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছে। বার বার স্থান পরিবর্তন করায় তাদেরকে খুঁজে পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার ও সজিবকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সজিবের পরিবারের সদস্যরাও আত্মগোপনে চলে গেছে।
এএজেড
