‘চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতন আন্দোলন শুরু’
১০ ডিসেম্বরের পর খালেদা জিয়ার নির্দেশে দেশ চলবে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে শুরু হলো সরকার পতনের আন্দোলন।
বুধবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এটি ছিল বিএনপির পূর্বঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশ। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি, দলের পাঁচ নেতা হত্যার বিচার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ বিভাগীয় গণসমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। সভায় জাতীয় নেতাদের পাশাপাশি দলের স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।
মীর নাছির বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে খালেদা জিয়ার সরকার চলবে। যারা খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হলো।
সমাবেশে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার পতন হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে। তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে আসবেন।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিলসহ গণসমাবেশে যোগ দেন।
পথে পথে বাধার অভিযোগ
চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশস্থলে আসার সময় নেতা-কর্মীরা বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতারা। তারা বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে বেশ কিছু স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা এবং যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে করা হয়েছে। এই হামলা ও মারধরের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. সারওয়ার উদ্দিন সেলিম বলেন, মঙ্গলবার থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। যাতে কেউ সমাবেশে না যায়। সমাবেশে যারা যাবে তাদের উপজেলায় আর ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন মীরসরাই আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
তিনি বলেন, মীরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট বাজারে দুই হিঙ্গুলি বিএনপির আহ্বায়ক কাজী সালেহ আহমেদ, পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক জসিম উদ্দিনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছেন আওয়ামী লীগের লোকজন। বুধবার সকাল থেকে এলাকায় তারা লাঠিসোটা নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। বিএনপির লোকজন যাতে সমাবেশ না যায় সেজন্য আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তারপরও সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, মঙ্গলবার রাতে অনেক বাড়িতে পুলিশ তল্লাশির নামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মহাসমাবেশে আসার পথে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। তাদের বহনকারী কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখলেও পরিবহন মালিক সমিতি আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি দিতে রাজি হয়নি। নগরীতেও আওয়ামী লীগের লোকজন গায়ে পড়ে ঝগড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। আমরা এসব কিছুতে কান দিচ্ছি না। সবকিছুর পরও সমাবেশ সফল করা হবে।
এই সমাবেশে চট্টগ্রাম মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ), কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এর আগে ১০ বছর আগে ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা করেছিল বিএনপি। সেই সভায় প্রায় ১৫ লাখ লোকের সমাগম হয়েছিল বলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দাবি করেন। আজকের এই জনসভায় আরও বেশি লোকসমাগমের আশা করছে দলটি।
এসএন