ধরলার ভাঙনে বাড়ি-ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ঠেকানো যাচ্ছে না ধরলার ভাঙন। গত এক সপ্তাহে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল এলাকায় ধরলার তীব্র ভাঙনে ১০টি বাড়িঘর, হাফ কিলোমিটার সড়কসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে প্রায় চার শতাধিক পরিবার।
অন্য দিকে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকার ধরলার ওপারে ৭টি বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি ধরলায় বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে শতাধিক পরিবার।
ধরলার ভাঙন দেখা দেওয়ায় উপজেলার চরগোরকমন্ডল ও ধনিরাম এলাকার শতশত পরিবার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ এলাকায় ভাঙন ঠেকানো হয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না করলে চর গোরকমন্ডল গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। ভাঙন রোধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
চর গোরকমন্ডল এলাকার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম ও মাইদুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এই এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। গত আড়াই তিন মাসে প্রায় ৩০টি পরিবারসহ ভুট্টা, আখসহ বিভিন্ন ফসলি জমি, গাছপালার বাগান ও বাঁশঝাড় নদী গিলে খেয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে মাত্র ৩০০ গজ এলাকা ভাঙন ঠেকানো গেলেও গত এক সপ্তাহে ধরলার তীব্র ভাঙনে ৮ থেকে ১০টি বাড়ি-ঘরসহ একমাত্র সড়কটির বড় অংশ নদীতে চলে গেল। ভাঙন রোধ করতে না পারলে আবারও বাড়ি ভিটা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হবে। তারা দ্রুত ভাঙন রোধ করতে কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।
বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইলিয়াস হোসেন, আমার এই গ্রাম ধরলা নদীর দুই পাড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধরলার পূর্ব পাড়ে দুই কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন রোধে কাজ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা এখনো চলমান আছে। তার ধনিরাম ধরলার পশ্চিম পাড়ে কয়েকদিনের তীব্র ভাঙনের ৭টি বাড়িঘর ও শতশত বিঘা ফসলি জমি ধরলার গর্ভে বিলীন হয়েছে। সেই সঙ্গে ভাঙন হুমকিতে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজে জরুরি ভিত্তিতে ধনিরাম এলাকার ধরলার পশ্চিম তীরে ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, চর গোরকমন্ডল এলাকার নদী ভাঙন উদ্বেগজনক। ভাঙন প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে আবেদনটি সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে দেওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ২ হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, চর-গোরকমন্ডল এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার জিও ব্যাগের প্রয়োজন। তিনি চর গোরকমন্ডল গ্রামটি ধরলার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকায় দুই কিলোমিটার জুড়ে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ চলমান আছে। সেই সঙ্গে ধরলা ভাঙন ঠেকাতে চর-গোরকমন্ডল এলাকাতেও আপাতত ২ হাজার ২০০ জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর রাখছি। সেই সঙ্গে চরগোরকমন্ডল এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের জন্য পানি উন্নয়ন কাজ করবে।
এসএন