রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

কৃষিতেই জীবন চলে সংগ্রামী আকলিমার

অনটনের সংসারে বিবাদ লেগেই থাকত। একপর্যায়ে তিন সন্তানসহ আকলিমাকে ছেড়ে স্বামী তোহিদুল ইসলাম চলে যান। আরেকটা বিয়ে করে নতুন করে সংসার পাতেন। এরপর ৫ বছর স্বামীর অপেক্ষায় সেখানেই কোনো রকম জীবনধারণ করছিলেন তিন সন্তান নিয়ে। পরে সন্তানদের নিয়ে ভাইয়ের বাড়ি চলে আসেন। নেমে পড়েন জীবন যুদ্ধে। শুরু করেন কৃষি কাজ। পরের জমি চাষ করে আজ সফল কৃষক আকলিমা।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের চরপেচাই গ্রামে আকলিমা বেগমের বাড়ি। ২০ বছর আগে বিয়ে হয় একই এলাকার তোহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিন সন্তানের জন্ম হয়। দিনমজুর তোহিদুল সংসার চালানো নিয়ে নানা নির্যাতন করতেন আকলিমাকে। সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে সবই সহ্য করতেন আকলিমা। তবুও তোহিদুল চলে যান তাদের ছেড়ে।

আকলিমা বেগম ভাইয়ের সহযোগিতায় চরপেচাই এলাকায় মানুষের জমি লিজ (কন্ট্রাক্ট) নিয়ে বাদাম, ভুট্টা ও ধানের চাষাবাদ করেন। তিন সন্তানকে নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন কৃষির উপর নির্ভর করেই। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে আর এগোতে পারেনি আকলিমার বড় ছেলে রায়হান। মা আকলিমার সঙ্গে ক্ষেতের কাজে সহযোগিতা শুরু করে। দ্বিতীয় ছেলে রাকিবুল হাসান পঞ্চম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে শিশু শ্রেণিতে পড়ে।

আকলিমা বেগম এ বছর দেড় বিঘা জমিতে বাদাম ও দেড় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। এভাবে তিনি মানুষের জমি লিজ নিয়ে গত ৫ বছর ধরে সন্তানের ভরণপোষণ ও পড়ালেখার খরচ চালিয়ে অনেকটা স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। পুরুষ শাসিত সমাজের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে পুরুষ চাষিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবন-যুদ্ধে সংগ্রামী এ নারী হয়ে উঠেছেন সফল চাষি।

আকলিমা জানান, তিনি গত ৫ বছর ধরে বাদাম, ভুট্টা ও ধানের চাষাবাদ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বাদাম ও ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার স্বামী ৫ বছর ধরে কোনো খোঁজ খবর রাখেনি। আমার তিন সন্তান। বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়াই সংগ্রাম করেই দুই ছেলে ও ১ মেয়েসহ জীবিকা নির্বাহ করছি। যদিও তেমন কিছু জমানো সম্ভব হয়নি। এক দিকে স্বামী থেকেও নেই, অন্য দিকে অভাবের কারণে বড় ছেলের পড়া বন্ধ হয়েছে। তাই বড় ছেলেসহ আমি ক্ষেতে কাজ-কাম করি। ছোট ছেলে ও মেয়ের পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন দুই সন্তানের পড়াশুনা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে পারি।

আকলিমা আরও বলেন, এখন আমার স্বামী না এলেও কোনো সমস্যা নেই। জায়গা জমি না থাকলেও ভাইয়েরা আমার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সব সময় ভাইয়েরা খোঁজ খবর নেন। কৃষি কাজেও ভাইয়েরা অনেক সহযোগিতা করেন। আমি এভাবেই আজীবন কৃষি কাজ করে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। তিনি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি কাজের সব ধরনের সহযোগিতার জন্য সু-দৃষ্টি কামনা করি।

আকলিমার ভাই ফজর আলী বলেন, আমার ছোট বোন আকলিমা খুবই পরিশ্রমী। তিন-চার বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলায়। কোনো প্রকার মজুর নেয় না। সব কাজই সে নিজে করে। মাঝে মধ্যে তার বড় ছেলে একটু সহযোগিতা করে। কৃষি কাজের পাশাপাশি হাঁস, মুরগি ও ছাগল পালনও করেন। এভাবেই মাঠে ময়দানে লড়াই সংগ্রাম করেই যাচ্ছে আকলিমা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, আকলিমার মতো নারীরা কৃষি কাজে এগিয়ে এলে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। সেই সঙ্গে কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে নারীদের যেমন কৃষির উপর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অন্য দিকে বাড়বে কৃষি উৎপাদনশীলতাও। কৃষি বিভাগ থেকে আকলিমাকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

এসএন

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের বিরামপুরে পিকআপভ্যানের ধাক্কায় হাসান আলী (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নাঈম হোসেন নামে আরও এক যুবক।

দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পল্লবী (দোয়েল মোড়) এলাকায়।

নিহত হাসান আলী পৌর শহরের থানাপাড়া (লিচু বাগান) এলাকার বাসিন্দা মিলন হোসেনের ছেলে। সে এবার আমানুল্লাহ স্কুল থেকে এসএসসি ২০২৫ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল বলে জানিয়েছেন স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মমিনুর ইসলাম।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সকালে মোটরসাইকেলে করে হাসান আলী ও তার বন্ধু নাঈম শহরে ঘুরতে বের হয়। তারা যখন পল্লবী মোড় এলাকায় পৌঁছায়, ঠিক তখন গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একটি মালবাহী পিকআপ তাদের মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে হাসান আলী রাস্তায় ছিটকে পড়ে এবং পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়।

স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাহাজুল ইসলাম তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আহত নাঈম হোসেন পৌর শহরের একই এলাকার নিয়ামত হক ভোলার ছেলে বলে জানা গেছে।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তরুণ শিক্ষার্থী হাসানের অকাল মৃত্যুতে সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাঝে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী হাফিজুর রহমান মিঠু। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ডেভিল হান্টের অভিযানে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সক্রিয় যুবলীগ কর্মী হাফিজুর রহমান মিঠুকে গ্রেফতার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।

রবিবার (২০ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ভূঞাপুর পৌর শহরের ঘাটান্দি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, মধুপুর থানায় নাশকতার মামলায় ওই যুবলীগ কর্মীকে গ্রেফতারের পর মধুপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হায়দরাবাদে শনিবার (২০ এপ্রিল) এক বিশাল গণবিক্ষোভের আয়োজন করে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড (AIMPLB)।

এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেন সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) দলের প্রধান এবং হায়দরাবাদের প্রভাবশালী মুসলিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি এই আইনকে “সংবিধানের মূল চেতনার বিরুদ্ধে” উল্লেখ করে বাতিলের জোর দাবি জানান।

“এই আইন আমাদের ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করছে। যতদিন না এটি বাতিল করা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন চলবে,”— বলেন ওয়াইসি।

তিনি আরও জানান, ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিমদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করায় মুসলিম সমাজে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে এবং তা মেনে নেওয়া যায় না।

সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইন অনুসারে, অ-মুসলিমদেরও ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য করা সম্ভব হতে পারে—এমন আশঙ্কা থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত। এই আইনকে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন মুসলিম নেতারা।

এই ইস্যুতে ইতোমধ্যেই ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। আদালতে সরকার জানিয়েছে, মে মাসে মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত অ-মুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

 

ছবি: সংগৃহীত

ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বিলটি ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষে পাস হয়েছে। আন্দোলন এখন হায়দরাবাদ ছাড়িয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আহ্বানে এবং ওয়াইসির নেতৃত্বে এই আন্দোলন ক্রমেই সারা ভারতব্যাপী শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের রূপ নিচ্ছে।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, তা শুধু রাজনৈতিক নয়, ধর্মীয় এবং সাংবিধানিক অধিকার নিয়েও গভীর প্রশ্ন তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, আদালতের রায়ে এবং গণআন্দোলনের চাপে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়।

সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: ট্রাইব্যুনালে সালমান, আনিসুল, দীপু মনি, পলকসহ ১৯ জন
বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আইন উপদেষ্টা
হাতিরঝিলে যুবদল নেতার ওপর হামলা, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে
আপিল বিভাগে নতুন দুই বিচারপতিকে সংবর্ধনা
বিয়ের আসরে কনের বেশে শাশুড়ি, থানায় হাজির বর
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ, রাস্তায় হাজারো মানুষ