বাঙালি গণহত্যার সুবিচার ও জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবি
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও তাদের অনুচরেরা বাংলাদেশের মাটিতে ১৯৭১ সালে বর্বরোচিত পন্থায় ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা ও প্রায় ৪ লাখ নারীকে নির্যাতিত করে। সেই ভয়াবহ গণউৎপীড়নে ১ কোটি মানুষ দেশ ছেড়ে ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এসবের দালিলিক প্রমাণ বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তে সংরক্ষিত আছে। এই হত্যাযজ্ঞ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অন্যতম নৃশংস গণহত্যা যা আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত। কিন্ত গত ৫১ বছরেও জাতিসংঘের কাছ থেকে এই নিকৃষ্টতম অপরাধের স্বীকৃতি আসেনি, যা আন্তর্জাতিক ন্যায়নীতি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার পথে বড় অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত।
বাঙালি গণহত্যার সুবিচার ও জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটির আয়োজনে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) নগরীর একটি কনফারেন্স হলে সভার আয়োজন করে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু। সভায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী, মহানগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম চৌধুরী, নারী বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুন নাহার খুশী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক খান, সাহেদ মুরাদ, প্রচার সম্পাদক জসিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার পলাশ বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, গতকাল ৩ অক্টোবর জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫১তম অধিবেশন চলাকালে এই প্রথমবারের মতো জেনেভার ইউএনএইচসিআর সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খ্যাতিমান বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। ইউরোপে অবস্থিত কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এর আয়োজন করে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এই আয়োজনকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের প্রতি সম্মান ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা আশা করি, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের চলতি ৫১তম অধিবেশনে বাংলাদেশের মাটিতে নিকৃষ্টতম মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট নিন্দা জানানো হবে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আর্মেনীয় এবং পরবর্তীকালের কম্বোডিয়া, রুয়ান্ডা ও বসনিয়ার গণহত্যার মতো বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি প্রদান করে জাতিসংঘ তার প্রাতিষ্ঠানিক নিরপেক্ষতা ও সুবিচার রক্ষা করবে।
এসজি