প্রশ্নপত্র ফাঁস ঘটনার প্রতিবেদন দাখিল সোমবার

আলোচিত কুড়িগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ায় পাঁচজন শিক্ষক, পিওনসহ ভারতে পলাতক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী এ ঘটনায় জড়িত বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তদন্ত কমিটির। তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শেষে আগামী সোমবার নাগাদ দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটি।
এদিকে মামলার পলাতক আসামি ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবু হানিফ ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, তদন্ত কমিটির তাদের তদন্ত কাজ শেষ করেছে। কমিটি এখন প্রতিবেদন তৈরি করছেন। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি আগামী দিনে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় তাও প্রতিবেদনে সুপারিশ আকারে পেশ করবে।
অধ্যাপক কামরুল ইসলাম বলেন, আগামী রবি অথবা সোমবার কমিটি লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্ত কার্যক্রমে পলাতক এক জনসহ মোট সাতজন প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ছয়জনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। অপর একজন বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গেছে বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন, কুড়িগ্রামের নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক জোবাইর রহমান, কৃষিশিক্ষার শিক্ষক হামিদুল ইসলাম, বাংলা শিক্ষক সোহের চৌধুরী ও পিয়ন সুজন মিয়া। এই ঘটনার পর ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবু হানিফ পলাতক আছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দিনাজপুর বোর্ডে অনুষ্ঠিত ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই কেন্দ্রের সচিব লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তার কাছে কয়েকদিনের আগাম প্রশ্নপত্র রয়েছে বলে জানান। পরে তার কক্ষ তল্লাশি করে গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়।
পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা ও রসায়ন পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর স্থগিত হওয়া চারটি পরীক্ষার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে জীববিজ্ঞান (তত্তীয়) ও উচ্চতর গণিতের (তত্তীয়) প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁস ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর রাতে ট্যাগ অফিসার ও কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বাদী হয়ে গ্রেপ্তার চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অন্যদের নাম ও সম্পৃক্ততা পায়।
এএজেড
