ট্রান্সমিটার লাগানো সেই পাখিটি মারা গেছে
কক্সবাজারের মহেশখালীতে উদ্ধার হওয়া বিলুপ্ত প্রজাতির পাখিটি মারা গেছে। উদ্ধার হওয়া পাখিটির শরীরে ট্রান্সমিটার লাগানো ছিল। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নের অর্থনৈতিক জোন এলাকা থেকে পাখিটি পাওয়া যায়। একই দিন রাত ১১ টায় পরিযায়ী পাখিটি বনবিভাগকে হস্তান্তর করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান। বনবিভাগের অফিসে নেয়ার পথেই পাখিটি মারা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। তিনি জানান, পরিযায়ী পাখিটি ধরা পড়ার পরপরই যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণের দরকার ছিল। কিন্তু উৎসুক জনতার ভীড়ে পাখিটি ভয় পেয়ে যায়। আর গুজব ছড়ানোর কারণে পাখিটি বনবিভাগের অধীনে নিতে কালক্ষেপণ হয়। যার কারণে পাখিটির মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছি।
এদিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রকল্প সহকারী মোহাম্মদ ফয়সাল জানিয়েছেন, পরিযায়ী পাখির গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য গবেষক দল পাখিদের গায়ে ট্রান্সমিটার ও পায়ে ট্যাগ লাগান। এই ধরণের পাখি না ধরাই উচিত। এরা হাজার হাজার মাইল উড়ার পর ক্লান্ত হলে বিশ্রাম নেন। ওই সময় পাখি গুলোকে শিকারীরা ধরে ফেলে।
যে পাখিটি মারা গেছে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে সে পাখির গায়ে গবেষনার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শ্রীমান দিলীপ কুমার কর্তৃক ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছে। তারা এরকম ২০ টি পাখিতে ট্রান্সমিটার লাগিয়েছিল।
এসময় তিনি আরো জানান, পরিযায়ী পাখির গায়ে বিভিন্ন ধরণের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থাকতে পারে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। পরিযায়ী পাখি স্পর্শ করলে ভাইরাস গুলো সংক্রমনের ঝুঁকি রয়েছে।
ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজম্যান্ট প্রতিষ্ঠানের রিসোর্স ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম জানান, পাখিটির নাম 'কালামাথা জৌরালি (Black-tailed Godwit)'। এটি বিলুপ্ত প্রজাতির একটি পাখি। এ ধরণের পাখি মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ-হাঁসের চর সহ বিভিন্ন নির্জন সমুদ্র পাড়ের চরাঞ্চলে বসবাস করে।
বিভিন্ন গবেষক বা গবেষনা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পাখির গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য এ ধরণের ট্রান্সমিটার লাগিয়ে থাকেন। ট্রান্সমিটার লাগানোর বিষয়ে তিনি আরো জানান, এই ধরণের ট্রান্সমিটার আমরা একটি কচ্ছপের গায়েও লাগিয়েছিলাম।
এএজেড