বিশ্ব পর্যটন দিবস: কক্সবাজারে চলবে সাত দিন মেলা
আজ ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র শহর কক্সবাজারে ৭ দিনের পর্যটন মেলা আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব শেষ হবে ৩ অক্টোবর।
প্রতিদিন নানা আয়োজনে মুখরিত থাকবে সৈকতের লাবণী পয়েন্ট। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগত পর্যটকদের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। তবে পুরো আয়োজনে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ করেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রশাসন ঘোষিত বিশেষ ছাড় বাস্তবায়ন নিয়ে শুরুতে তৈরি হয়েছে সংশয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট ও মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান, বিশ্ব পর্যটন দিবসে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত আরও আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চ ঘিরে চলবে ৭ দিনের উৎসব।
মেলায় প্রতিদিন থাকবে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আগামী জীবনের প্রজন্ম বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কৌতুক, বীচ ফুটবল, বীচ ক্রিকেট থেকে শুরু করে কক্সবাজারের নানান ঐতিহ্য নিয়ে নাটক।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় সৈকতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা। মেলাকে আকর্ষণীয় করতে লাবনী পয়েন্টে ২০০টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে। এসব স্টলে জনপ্রিয় আচার, শুটকি, পিঠাসহ থাকবে হরেক রকমের আয়োজন।
সুফিয়ান আরও জানান, মেলা চলাকালীন সময়ে আবাসিক হোটেলগুলোতে ২৫ থেকে ৭০ ভাগ পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি। পাশাপাশি রেস্তোরাঁগুলোতে দেওয়া হবে ২৫ ভাগ পর্যন্ত ছাড়। একই সঙ্গে সৈকতের কিটকট (বীচ ছাতা), ছবি তোলাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবাও বিভিন্ন অংকের ছাড়ের কথা তিনি বলেছেন।
তবে এই বিশেষ ছাড় নিয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন কক্সবাজারের রেস্তারা মালিক সমিতি। সমিতির সভাপতি নাইমুল হক চৌধুরী টুটুল জানান, ৫০ শতাংশ পর্যন্ত যে ছাড়ের কথা প্রশাসন বলছেন তা নিয়ে মালিকদের সাথে কোনো আলাপ করা হয়নি। কোনো প্রকার সমন্বয় ছাড়া এমন ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া রেস্তোরা মালিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বেশি হলে ক্ষেত্রে বিশেষ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছাড় দেবেন। পর্যটন দিবসের উৎসবে ৭ দিন পর্যন্ত এ ছাড় দেয়ার চেষ্টা করবেন।
কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেস সিকদার জানান, পর্যটন উৎসবে ব্যবসায়ীদের পক্ষে একটি বিশেষ অংকের অনুদান প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে যে ছাড়ের কথা বলা হচ্ছে তাও দেওয়া হবে।
তবে এ ছাড় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হবে এমনটা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি। তিনি জানান, সমিতিভুক্ত আবাসিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রতিটি হোটেলে একটি কক্ষ ৮০০ টাকায় এক রাত্রির জন্য বুকিং দেওয়া হবে। অন্যান্য কক্ষ ৫০-৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
আর পুরো আয়োজন সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন। আর এ পরিস্থিতিতে আজ পর্যটন উৎসব শুরু হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান, উৎসবের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ উৎসব। ঘোষিত ছাড়ের বিষয়টি বাস্তবায়নের নজরধারী রাখা হবে। সকল সেক্টরের সাথে সমন্বয় করে উৎসব চলবে ৭ দিন পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের অধীনস্থ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার প্রত্যক্ষ তত্ত্ববাবধানে ১৯৮০ সাল থেকে সকল সদস্য দেশে এটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও পর্যটন কেন্দ্রের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা।
এসআইএইচ