সৈয়দপুরে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে
ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগের শিকার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের ও হতদরিদ্র মানুষেরা। যান চলাচল ও দৈনন্দিন কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর মাঝে একটা গরম কাপড়ের জন্য সৃষ্টি হয়েছে তীব্র হাহাকার। সব মিলিয়ে জবুথবু হয়ে পড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ পুরো উত্তর জনপদ।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে। গত ২ দিন ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকলেও আজ সকালে তাপমাত্রা ছিল মাত্র ৮ ডিগ্রী। দুপুর ২ টা পর্যন্ত সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাঝারি শৈত্য প্রবাহের কারণে এমন পরিস্থিতি। আরও ২/৩ দিন এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে। এরপর তাপমাত্রা বাড়বে। তবে চলতি মাসেই আরও একটি শৈত্য প্রবাহের আশংকা রয়েছে।
গত কয়েক দিন যাবত এই অঞ্চলে বিরাজ করছে শীতের প্রবল আবহ। প্রায় সারাদিনই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকছে চারপাশ। সেইসাথে প্রবাহিত হচ্ছে মৃদু হিমেল বাতাস। দুপুরের দিকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও দুএক ঘন্টার মধ্যেই তা উধাও হয়ে যায়। রোদে তাপ নাই বললেই চলে।
ফলে তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। দুপুর নাগাদ শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও বিকেল থেকে আবারও বৃদ্ধি পায়। রাত গভীর হওয়ার সাথে ঠান্ডার প্রকোপ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে, যা সকালেও বহাল থাকে। ফলে বেহাল দশা মানুষ আর প্রাণি সবারই।
সোমবার এই পরিস্থিতি আরও প্রকট হয়েছে। কুয়াশা ও বাতাসের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গড় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১০ ডিগ্রিতে। ফলে কুঁকড়ে পড়েছে পরিবেশ ও জীবন যাপন। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে মাত্র ২ গজ দূরেও দেখা যাচ্ছেনা। দৃষ্টি সীমা কমে যাওয়ায় সড়কে অল্পসংখ্যক যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। রেলপথ ও আকাশপথেও একই অবস্থা। শিডিউল বিপর্যয় ও বিলম্বিত যাত্রা করছে ট্রেন ও বিমান।
জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের না হওয়ায় রাস্তা ঘাট, হাট বাজার, স্টেশন বাস টার্মিনালসহ জনসমাগম স্থানগুলোতে লোকজনের উপস্থিতিও কম। সরকারি বেসরকারি অফিসে কর্মজীবীরা আসলেও কাজে কর্মে চলছে স্থবিরতা। জীবিকার তাগিদে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ বের হলেও কাজ না পেয়ে অনেকে চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
রিকশা-ভ্যান চালক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিকরা পথে ও মাঠে নেমে সামান্য কাজ করেই শীতে কাবু হয়ে পড়ছে। হিম শীতল আবহাওয়ায় মূহুর্তেই জমে যাচ্ছে শরীর। একাধিক গরম কাপড় গায়ে দিয়েও শীত নিবারন করা যাচ্ছেনা। তাই কাজ ছেড়ে হাত গুটিয়ে একটু তাপের জন্য ছুটছে হচ্ছে আগুনের আঁচ পেতে।
সামর্থ্যবানরা শীতবস্ত্র পড়ে, আগুন তাপিয়ে, ঘরে থেকে শীত থেকে বাঁচতে পারলেও হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা খুবই করুণ। তারা না পারছে শীত নিবারন করতে, না পারছে খাবার সংগ্রহ করতে। ফলে দূর্বিষহ পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করছে। তাই তাদের মধ্যে একটা শীত বস্ত্রের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে।
কেএফ/