২২ কিলোমিটার সাতাঁর কেটে মসজিদের অর্থ সংগ্রহ
নিজের এলাকায় মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ২২ কিলোমিটার সাতাঁর কাটলেন ৬৫ বছর বয়েসের এক বৃদ্ধ । সময় নিলেন মাত্র ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। এ ঘটনাটি ঘটে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায়। ৬৫ বছর বয়স্ক ওই বৃদ্ধের নাম মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি পেশায় একজন কৃষক।
জানা যায়, কৃষক শহিদুল ইসলাম রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দঁড়ি বালুয়াকান্দি গ্রামের হাজী দানিছ আলীর ছেলে। তার এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের তহবিল সংগ্রহের জন্য সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি।
আরো জানা গেছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী মো: আল আমিন মিয়ার সহায়তায় শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এই সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় যুব সমাজ। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে উপজেলার আড়িয়াল খাঁ থেকে মেঘনা নদীতে এক টানা সাড়ে ২২ কিলোমিটার সাঁতার কাটার রেকর্ড করেন কৃষক শহিদুল।
এদিন সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর আদিয়াবাদ সরকারি কলেজ ঘাট থেকে সাঁতার কাটা শুরু করেন তিনি। মেঘনা নদী দিয়ে সাতার কেটে বেলা ২টা ২০ মিনিটে নরসিংদী সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি ব্রিজ সংলগ্ন ঘাটে এসে পৌঁছান। এই দুই ঘাটের দূরত্ব সাড়ে ২২ কিলোমিটার। সাঁতরে পার হতে তার মোট সময় লাগে ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। এ সময় তাকে উৎসাহ দিতে অনেকেই তার সঙ্গে সাঁতার প্রতিযোগতায় অংশ নেন।
সাঁতরে নাগরিয়াকান্দি এলাকায় তীরে ওঠার পর দর্শনার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন শহিদুল ইসলাম। এ সময় ঘাটে হাজার হাজার মানুষ তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি অনেকে মসজিদ নির্মাণের ব্যয়ের অর্থ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে এম আর রহমান, এস এম শরীফ, আ. করিমসহ আরো কয়েকজন জানান, শহিদুল ইসলামের মেঘনা নদীতে সাঁতারের কথা শুনেই তাঁরা ছুটে এসেছেন। এর আগেও তার সাঁতারে সবাই আনন্দ উদযাপন করে ছিল। এই বয়সে এসেও মসজিদ নির্মাণের তহবিল সংগ্রহে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ায় ভিন্ন নজির গড়েছেন।
শহিদুলের সাতার দেখতে আসা এস এম শরীফ নামে এক দর্শক জানান, 'আমরা চাই তার এমন কৃতিত্বের জন্য সারা বিশ্বের মানুষ তাকে মনে রাখবে। এ বয়সে তার এই সাফল্যে গর্বিত রায়পুরাবাসীও।'
প্রসঙ্গত, এর আগেও উপজেলার পল্লি চিকিৎসক বকুল ৪০ কিলোমিটার সাঁতরে রেকর্ড করেন। তার পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে দুই দুইবার রেকর্ড করেন ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধ কৃষক। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মেঘনা নদীতে ১৮ কিলোমিটার সাঁতরে ৪ ঘণ্টা সময় নেন। তাকে উৎসাহ দিতে স্থানীয়রা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করেন। যার পুরো টাকা তিনি মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যয় করেন। অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করতে দানশীল ব্যাক্তিদের দৃষ্টি কামনা করে সহযোগিতা চেয়ে আজও এমন একটি সাঁতারে অংশ নেন শহিদুল ইসলাম।
কৃষক শহিদুল বলেন, ‘প্রতিদিন সাঁতার কাটি বলে এখনও সুস্থ জীবন যাপন করে যাচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে নিজ গ্রামে মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা ছিল ’
এসআইএইচ