দুই গারো স্কুলছাত্রীর ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই আদিবাসী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী ৫ নম্বর গাজিরভিটা ইউনিয়নের কাজলের মোড় বাজারে এ মাববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে গারো আদিবাসী লীগ, মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প এবং সাধু পিতরের নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মানববন্ধনে কয়েকশ নারী-পুরুষ ও স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া হালুয়াঘাট গারো ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপতি পলাশ রিছিল অভিযোগ করে বলেন, ‘গারো আদিবাসী ধর্ষণের ঘটনায় চার দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত আসামিরা গ্রেপ্তার না হয় তাহলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
হালুয়াঘাট গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি জেমস্ রেমা বলেন, ‘মামলার পরে আমরা আশায় ছিলাম প্রশাসন দ্রুত ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করবে। যেহেতু আসামিদের নামসহ আমরা মামলা করেছি। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পারায় আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা চাই দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হোক।’
গারো আদিবাসী লীগের সভাপতি তুরষ দাংগ বলেন, ‘ধর্ষক কারো ভাই বা বন্ধু হতে পারে না। আমরা এ দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা সে জন্যই গত তিন দিন কোনো কর্মসূচী দিয়নি। কিন্তু আমরা এখন দেখছি আমাদের পুলিশ-প্রশাসন এখনও আসামিদের ধরতে পারেনি। আমরা আদিবাসীরা হতাশ হয়েছি। আমরা কি বিচার পাবো না? যদি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আমরা সারা দেশে গারো সম্প্রদায় অচিরেই মাঠে নামবো।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে দুই স্কুলশিক্ষার্থী পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পথে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের সদস্যরা তাদের খুঁজতে বের হয়। পরে তাদের দুজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
ধর্ষণের শিকার দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, তাদের ভয় দেখিয়ে আইনের সহায়তা নিতে দেয়নি এ ঘটনায় জড়িত আসামিদের পরিবারের লোকজন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ৩০ ডিসেম্বর দুই গারো স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়। অভিযুক্ত প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান খান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘মামলার পরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আমাদের টিম আসামিদের ধরতে মাঠে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই।’
/এএন