জীবিত মুক্তিযোদ্ধা সন্তানকে মৃত দেখিয়ে ভাতা আত্মসাৎ!
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে জীবিত সন্তানকে কাগজপত্রে মৃত দেখিয়ে এককালীন ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন। তিনি উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তরফরাম ঘুনিপাড়া গ্রামের মো. বদর উদ্দিন মিয়ার ছেলে।
জীবিত মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের অভিযোগ, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি। দেশ স্বাধীন করেছি। বর্তমান সরকার জাতির বীর সন্তানদের সর্বোচ্চ সম্মানে সম্মানীত করেছেন। শুধু তাই নয়, একটু স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপনের জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু করেছেন। সরকারের সেই উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা উত্তোলন করছেন একটি কুচক্রি মহল। আমি একজন (অবঃ) সেনা সদস্য গেজেট নং ৭০৮৪।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমাকে থাকতে হয়েছে। চাকরি শেষে আমি মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ সকল কাগজপত্র আমার মায়ের কাছে রেখে ভারতে চলে যাই। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে এসে আমি চাকরির ও মুক্তিযোদ্ধার সকল কাগজপত্র খোঁজ করি। তবে বাড়ির লোকজন সকল কাগজপত্র হারিয়ে গেছে বলে জানান। পরে আমি জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমার বাবা বদর উদ্দিন প্রতারক চক্ররের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
এদিকে বয়সের কারণে ও স্টোকে প্যারালাইসিস অবস্থায় বর্তমানে বেকড়া ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামে বোনের বাড়িতে অবস্থান করছি। শষ্যাসায়ী হয়েও আমি এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। চরম মানবেতর জীবনযাপন করছি।’
আবুল হোসেন বলেন,যারা আমাকে মৃত দেখিয়ে ভাতা উত্তোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। একই সঙ্গে তার ভাতা নিজ নামে ইস্যু করার দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে ১৪২ বছরের বয়োবৃদ্ধ বদর উদ্দিন শ্রবণশক্তিহীন হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন দীর্ঘ ৩০-৪০ বছর নিরুদ্দেশ থাকা অবস্থায় শ্বশুর বদর উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা তুলতেন বলে স্বীকার করেছেন পুত্রবধূ শেফালী। আবুল হোসেন ফিরে আসার পর থেকে ভাতার টাকা তাকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ