কুমিল্লায় এক সপ্তাহে বন্ধ ৪৮ ক্লিনিক
নানা অনিয়ম ও অভিযোগে কুমিল্লায় গত ১ সপ্তাহে ৪৮টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশেরই লাইসেন্স নেই বলে জানিয়েছেন কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী।
তিনি জানান, সংশোধনের সময় বেঁধে দেওয়া হলেও তারা সময়মতো তাদের অনিয়ম সংশোধন করতে পারেনি। তাই বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি হাসপাতাল এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বলে জানান তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে লাকসামে ৯টি, চান্দিনায় ৪টি, নাঙ্গলকোটে ৩টি, বুড়িচংয়ে ২টি, হোমনায় ২টি, মনোহরগঞ্জে ২টি, দাউদকান্দিতে ৮টি, সদরে ১টি, বড়ুরাতে ৩টি, মেঘনাতে ২টি, দেবিদ্বারে ২টি, লালমাইতে ২টি ও চৌদ্দগ্রামে ৫টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বলা হয়েছে তাদের প্রতি নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে যেন সম্পূর্ণ লাইসেন্স সংগ্রহ ব্যতীত পুনরায় যেন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা না হয়।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন বলেন, এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। আমরা লাইসেন্স নিয়ে যেমন কাজ করছি, তেমনি প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ডাক্তার এবং নার্সসহ অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতেও শর্ত মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে।
গত ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে তাদের লাইসেন্স স্বয়ংসম্পূর্ণ না। কেউ কেউ লাইসেন্সের আবেদনই করেননি। কেউ আবার অনলাইনে আবেদন করেই তাদের কাজ শেষ বলে মনে করছেন। অবহেলা করে জানতেও চাইছেন না কেন তাদের অনুমোদন দিচ্ছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সের শর্ত মানছেন না। সেবা দিচ্ছেন অপর্যাপ্ত এবং অদক্ষ জনবল দিয়ে।
কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে অপরিচ্ছন্নতা এবং রোগীর প্রতি অবহেলার চিত্র প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায় এবং অদক্ষদের দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর প্রমাণও মিলেছে। গত শনিবার কুমিল্লা নগরীর তেলিকোনা এলাকায় নিবেদিতা নামে একটি হাসপাাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে অপারেশন থিয়েটারের ফ্রিজে গরুর মাংস রাখা এবং একই হাসপাতালে সদ্য সার্জারি রোগীকে এক ঘণ্টার মধ্যেও পর্যবেক্ষণে আসেনি কোনো চিকিৎসক বা নার্স। সেখানে গিয়ে একজনকেই পায় পর্যবেক্ষক দল, যিনি একাধারে ম্যানেজার, চিকিৎসক এবং নার্সের দায়িত্ব পালন করেন।
টিআর/এসজি