পোলের পরিবর্তে বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুতের লাইন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তিতাস নদীর পাড়ে হাওরের মাঝখানে বিদ্যুতের লাইনের জন্য পোলের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে বাঁশের খুঁটি। গত চার মাস ধরে এই বাঁশের খুঁটিতেই চলছে পল্লী বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টের (এসটি) লাইন। এতে চরম আতঙ্ক ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন জেলেরা।
উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের মেঘালয় মাঠ সংলগ্ন স্থানে ১১ হাজার ভোল্টের লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে বাঁশের খুঁটি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই নৌপথ দিয়ে পারাপার হচ্ছে সেখানকার গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। বড় ধরনের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কায় কাটছে তাদের জীবন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাকশিমুল ইউনিয়নের মেঘালয় মাঠ সংলগ্ন হাওরে তিতাস নদীর উত্তর পাড়ে বাঁশের খুঁটিতে পল্লী বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টেজের লাইন। এই লাইনে বিদ্যুৎ যাচ্ছে পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নের ২০-২২ গ্রামের ২০-২৫ হাজার গ্রাহকের ঘরে। ক্যাবলের ভার যেন সইতে পারছে না বাঁশগুলো। নড়বড়ে হয়ে কিছুটা হেলে পড়েছে। কাছ থেকে দেখলেই ভয় করে। নিচ দিয়ে যাচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌকা। আসা যাওয়া করছে জেলেরাও। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা। ঘটতে পারে প্রাণহানিও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শতশত নৌকা এই খুঁটির পাশ ও নিচ দিয়ে যাতায়াত করছে। খুঁটির সঙ্গে সামান্য ঘষা বা ধাক্কা লাগলেই রয়েছে বড় অঘটনের শঙ্কা। সন্ধ্যা ও রাতে আরও বিপজ্জনক। আমরা শত চেষ্টা করেও কর্তৃপক্ষকে দিয়ে সিমেন্টের খুঁটি বসাতে পারছি না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অরুয়াইল সাব-জোনাল অফিস সূত্র জানায়, গত বর্ষার শুরুতে সেখানে বেশ কয়েকটি খুঁটি ভেঙে যায়। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। পানির কারণে সিমেন্টের খুঁটি না বসিয়ে বাঁশের টাওয়ার দিয়ে লাইন টানা হয়েছে। বর্ষার পানি চলে গেলে ভালো খুঁটি বসানো হবে।
অরুয়াইল স্টিলবডি নৌ-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেহান উদ্দিন বলেন, আমরা ওই জায়গা দিয়ে নৌকায় করে ভারি মালামাল আনা-নেওয়া করি। বাঁশের খুঁটিতে ধাক্কা লাগলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।
বাছির মিয়া নামে এক মাঝি বলেন, বাঁশের খুঁটিগুলো পানির স্রোতে পড়ে গেলে অনেক লোকের প্রাণহানি ঘটবে।
মিলন মিয়া নামে একজন বলেন, দিনরাত নদীতে মাছ ধরি। ওই খুঁটির কাছে গেলেই ভয়ে বুক কাঁপতে থাকে। এই বুঝি ক্যাবলসহ মাথায় পড়ল।
পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বলেন, বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুৎ মানেই ঝুঁকি। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
অরুয়াইল সাব জোনাল অফিসের দায়িত্বে থাকা এজিএম জহিরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, গত বন্যায় পানির স্রোতে তিতাস পাড়ের তিনটি খুঁটি পড়ে যায়। গ্রাহকদের সুবিধার্থে বাঁশের অস্থায়ী টাওয়ার তৈরি করে সংযোগ চালু রেখেছি। বিধান না থাকলেও মানবিক কারণে কাজটি করেছি। এখনো সেখানে অনেক পানি। তাই খুঁটি বসানো যাচ্ছে না। ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পানি কমার পরই সেখানে স্থায়ী খুঁটি বসানো হবে।
এসজি