ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীর উপর হামলার অভিযোগ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে মো. এনামুল হক ভূঁঞা (৬৯) নামে এক ব্যবসায়ীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ওই ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৭ আগস্ট) রাতে এ ঘটনায় চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীকে ১ নম্বর বিবাদী করে তার অনুসারী কিশোর গ্যাংয়ের ৮ সদস্যের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। এর আগে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) রাত পৌনে ৯টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজারস্থ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত আইয়ুব আলী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী।
ভুক্তভোগী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হামলার শিকার ব্যবসায়ী মো. এনামুল হক ভূঁঞা একজন ঠিকাদার ব্যবসায়ী এবং মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি। তিনি মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পূর্ব মুছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন দোকান থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে দোকান ঘরের ভাড়া সে নিজে আদায় করতেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায় স্থাপিত দোকান ঘর থেকে ভাড়া আদায় করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কর্মসূচি ঘোষণা করায় আইয়ুব আলী বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তবে তার বাঁধার মুখে দোকানের ভাড়া আদায় করতে ব্যর্থ হয় আইয়ুব আলী এবং তার দাবিকৃত চাঁদার ১০ লাখ টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এর পর থেকে ব্যবসায়ী এনামুলকে মারধরসহ করে সম্মানহানি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী এনামুল হক তার পৈত্রিক নিবাস মুছাপুরে যায়। এমন খবর পেয়ে আইয়ুব আলী তার লালিত পালিত কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ে বাংলাবাজারের জিরো পয়েন্টে ওঁত পেতে থাকে। রাত পৌনে ৯টার দিকে এনামুল হক বাংলাবাজার থেকে বসুরহাটে আসার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠলে আইয়ুব আলীর নির্দেশে বাংলাবাজারের জিরোপয়েন্ট এলাকায় তাকে ঘিরে ধরে মারধর করার চেষ্টা করা হয়। এরপর তিনি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে আইয়ুব আলী চেয়ারম্যানসহ তার কিশোর গ্যাং সদস্যরা একত্রিত হয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে সিএনজি থেকে নামিয়ে আইয়ুব আলীর নেতৃত্বে ও নির্দেশে পুনরায় তাকে গাড়ির গতিরোধ করে গালমন্দ করে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, চড়, থাপ্পড় ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। এ সময় তার পরনে থাকা পাঞ্জাবী-পায়জামার পকেট ছিঁড়ে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা।
অভিযোগের বিষয়ে চাইতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আইযুব আলী বলেন, যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে তার বিরুদ্ধেও একটি লিখিত অভিযোগ থানায় দেওয়া রয়েছে। থানায় খবর নেন। এ কথা বলেই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
ব্যবসায়ী এনামুল হকরে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাদেকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগে আইয়ুব আলীকে ১ নম্বর বিবাদী করা হয়। পুলিশ লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করছে। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ