৪র্থ দিনেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যহত
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, মারধর ও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বহিষ্কার করার ঘটনায় উত্তাপ্ত হয়ে উঠেছে শিক্ষাঙ্গন। ৪র্থ দিনের মত (বুধবার ২২ আগস্ট) প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহাবুবর রহমানের শাস্তি ও বিচারের দাবি জানিয়ে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের অবরোধে আটকা পড়েন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম। পরে জেলা পরিষদের প্রশাসক নজরুল ইসলামের আশ্বাসে অবরোধ সরিয়ে নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মাহবুবার রহমানের কথামত বিদ্যালয়ে প্রবেশের মূল ফটক আটকিয়ে রাখেন এবং বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাঁধা সৃষ্টি করেন। এতেকরে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের ধূলিহর বাজারে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করতে থাকেন। এতেকরে সড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মাহাবুবর রহমানের দুইটি কুশপুত্তলীকা দাহ করে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে স্বপদে বহাল ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহাবুবুর রহমানকে পদত্যাগ ও বিচারের দাবি জানিয়ে 'সভাপতির দুইগালে জুতা মারও তালে তালে', 'শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ কেন জবাব দাও জবাব দাও' সহসভাপতির পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। আর নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করে চলবেন বলে জানান।
এর আগে গত ২০ আগস্ট সকালে বিদ্যালয়ের ভেতরেই প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও মারধর করেন বিদ্যালয়টির সভাপতি মাহাবুবর রহমান। পরে শিক্ষককে মারধরের প্রতিবাদে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করেন। এসময় তারা আন্দোলনে মাহবুবর রহমানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে শাস্তি ও বিচারের দাবি জানান। তবে শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেয়া সময়ের ভিতরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অভিযুক্ত মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি।
একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের স্কুল পরিদর্শন করেন। এসময় বিদ্যালয়টির শিক্ষকসহ এসএমসি কমিটির সদস্যদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। তবে সভাপতি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা ক্লাস করবে না বলে শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করেন। এসময় শিক্ষা কর্মকর্তা এঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধান করার আশ্বাস্ত করেন। এক পর্যায়ে বুধবার সকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মানববন্ধন করতে চাইলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে করতে নিষেধ করেন বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষকরা।
এএজেড