কুড়িগ্রামে ডিজিটাল কবর ব্যবস্থাপনা, থাকছে কিউআর কোড
দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধী ও কবর ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন করা হয়েছে। রবিবার (২১ আগস্ট) বিকালে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কবর ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পদ্ধতির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
কবর ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করে ‘অপ্রতিরোধ্য কুড়িগ্রাম’ নামক একটি সামাজিক সংগঠন।
সংগঠনটির প্রধান উদ্যোক্তা অন্তু চৌধুরী বলেন, আইসিটি খাতে সুদূর প্রসারী উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি জাতির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি ও তাদের বীরত্বের কাহিনীগুলো আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার উদ্দেশে ডিজিটাল কবর ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছে অপ্রতিরোধ্য কুড়িগ্রাম। শুধু মুক্তিযোদ্ধা নন, সাধারণ মানুষের কবরগুলোও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে করে মৃত ব্যক্তির নিকতট আত্মীয়রা সহজেই তাদের পরিবারের মৃত সদস্যদের কবর সনাক্ত করতে পারবেন। অনেক সময় একটি কবরের উপর আরেকটি কবর দেয়ায় পূর্বে কবরস্ত ব্যক্তির চিহ্ন থাকে না। এতে করে পূর্ব পুরুষদের শেষ চিহ্নটুকু খুঁজে পায় না আগামী প্রজন্ম। কিন্তু কবর ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ মিলবে সাধারণ মানুষের।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জেলা শহরের কেন্দ্রীয় কবর স্থানের ১ হাজার ৩৯৬ জন কবরবাসী এবং জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ৮৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার তথ্য ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। কবরগুলোতে কিউআর কোড বসানো হয়েছে। সেই কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে কবরস্ত মরহুম বা মরহুমার সকল তথ্যাদী পাওয়া যাবে। www.dcmsbd.com-এই ওয়েবসাইটে কবরের প্লট বুকিং করা যাবে এবং মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশ সনদ পাওয়ার পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির আয়কর সনদ থাকলে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই তা বাতিল করা যাবে। ৩৬০ ডিগ্রি স্ট্রিট ভিউ রাখা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রবাসী ব্যক্তিরা স্ব শরীরে উপস্থিত না হয়েও কবর পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি ব্যবহারের ফলে বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস করতে সুবিধা হবে। এতে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সংক্রামক রোগে পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা গবেষণার জন্য কবর ডিজিটালাইজড বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এ সময় অন্তু চৌধুরী দাবি করেন, দেশের দারিদ্র্যতম জেলা হলেও মেধার কোনো কমতি নেই। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানাচ্ছি কুড়িগ্রামে একটি হাইটেক পার্ক, একটি আইটি ইনটিউডেটর এবং চরাঞ্চলগুলোকে আইসিটি ভিলেজে রূপান্তরিত করা।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কুড়িগ্রাম প্রথমবারের মতো ডিজিটাল কবর ব্যবস্থাপনা চালু হওয়ায় এর সুফল পাবেন। এতে করে জেলাটিকে নতুনভাবে তুলে ধরবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মন্জুর-এ-মুর্শেদ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা নাসির উদ্দিন,পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন, কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুল ইসলামসহ প্রমুখ।
এসআইএইচ