রংপুরে সবজি চাষে লাভবান কৃষকেরা
উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় ধান। ধান চাষের পাশাপশি সবজি চাষে পিছিয়ে নেই এ জেলার কৃষকেরা। গত বছর করোনাকালে সবজিতে তেমন দাম না পাওয়ায় এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আবাদ করেছে চাষিরা এবং লাভের মুখ দেখছেন।
শীতের আগাম সবজি বাজারে তুলেছে কৃষকরা। এতে বেশি টাকা আয় করছেন বলে জানান ছাত্তার নামে এক কৃষক। বিষয়টি মাথায় রেখে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে রংপুরের নারী চাষিরাও।
কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা শীতকালীন সবজির চারা তৈরিতে ব্যস্ত। কেউ সেই চারা ক্ষেতে লাগাচ্ছেন আবার কেউ ক্ষেত আগাছামুক্ত করতে নিড়ানি দিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি শীত মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে শাকসবজির আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে রংপুর সদর কোতোয়ালি উপজেলায় ৫৪০ হেক্টর, বদরগঞ্জ উপজেলায় ৪৭৫ হেক্টর, তারাগঞ্জ উপজেলায় ২৪৫ হেক্টর, পীরগাছায় ৮০ হেক্টর, পীরগঞ্জ উপজেলায় ৮০ হেক্টর, কাউনিয়া উপজেলায় ২০০ হেক্টর, মিঠাপুকুর উপজেলায় ১৮০ হেক্টর, এবং গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৫২০ হেক্টর ।
এরমধ্যে শিম ৫২০ হেক্টর, মুলা ১৩০ হেক্টর, বেগুন ২৮০ হেক্টর, ফুল কপি ৮৫ হেক্টর, বাঁধা কপি ৩০ হেক্টর, পালংশাক ১০৫ হেক্টর এবং লালশাক ৭৫ হেক্টর।
ক্ষেতজুড়ে ছেয়ে আছে লালশাক। পাশাপাশি খেতে আগাছাও একেবারে কম জন্মায়। তাই ক্ষেতের মধ্যে বসে আগাছা পরিষ্কার করছিলেন কৃষক আজিজুল হক। সেই কাকডাকা ভোরে জমিতে পা ফেলেন তিনি।
শীতকালীন আগাম সবজি বিক্রির পর দ্বিতীয় বারের মতো সবজি চাষে এভাবেই ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামের কৃষকরা। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের আবর্তে গরু দিয়ে হালচাষ পদ্ধতি হারিয়ে যেতে বসেছে। শীতের সবজির বর্ণিল সবুজে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।
শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, বেগুন, মুলা, পটল, পালং ও লাল শাকসহ রকমারি শীতের সবজি। রংপুর জেলার আটটি উপজেলার একাধিক সবজিখ্যাত গ্রাম ঘুরে শীতের সবজি নিয়ে কৃষকদের কর্মব্যস্ততার এমন দৃশ্য উঠে আসে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের শাকসবজির ভালো উৎপাদন হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষিরা বেশি পরিমাণে শাকসবজির চাষ করেছে। আগাম জাতের শাকসবজি বাজারে উঠেছে। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছে চাষিরা এবং আবারও দ্বিতীয়বারের মতো সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
তিনি বলেন, এ বছর বন্যা ও দুর্যোগ না হওয়ায় কৃষকরা বীজ বপন থেকে শুরু করে চারা পরিচর্যা সুষ্ঠুভাবে করতে পারছে। তেমন কোনো রোগবালাই নেই। এখন অল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে ভরা মৌসুমে কৃষকরা ভালো দাম পাবে বলে আশা করছি।
এএস/এএন