ঝিনাইদহে প্রাইভেট পড়ানোর টাকা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ১
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার শেখ বেড়বিন্নি গ্রামে প্রাইভেট পড়ানোর টাকা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আলতাফ হোসেন বিশ্বাস (৬২) নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি বেড়বিন্নি গ্রামের নকিব বিশ্বাসের ছেলে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, রাজু আহম্মেদ নামে স্থানীয় এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়ে টাকা না দেওয়া নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। ৫ দিন কম পড়িয়ে শিক্ষক রাজু আহম্মেদ টাকা দাবি করলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর রহমানের পিতা শেখপাড়া বিন্নি গ্রামের নজরুল মুন্সি এর প্রতিবাদ করেন। তিনি ৫ দিনের টাকা কম দিতে চাইলে শিক্ষক রাজু আহম্মেদ ছাত্রকে মারধর করেন। নজরুল শহিদুল বিশ্বাসের সমর্থক। এদিকে এক সপ্তাহ আগে বেড়বিন্নি বাজারে শহিদুলের সমর্থক শিক্ষক রাজু আহমেদ ও বকুল হোসেনকে মারধর করে সিরাজুলের লোকজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে প্রাইভেট পড়ানোর টাকা নিয়ে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন রাজু নামে এক স্কুল শিক্ষক। এ নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফার সমর্থক ওই গ্রামের সিরাজুল, আজিজ, কালু ও আনোয়ারের লোকজন এবং বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের সমর্থক সুজাত, মতিয়ার ও হাসমতের লোকজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে সকালে দেশীয় অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে শহিদ গ্রুপের সমর্থকরা শেখপাড়া বিন্নি গ্রামে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে শহিদ বিশ্বাসের সমর্থক আলতাফ বিশ্বাস, নাজমুল ও মিলনসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। আহতদের ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তির পর দুপুরে আলতাফ বিশ্বাস মারা যান।
ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রেজওয়ান আক্তার জানান, হরিণাকুন্ডু উপজেলার বেড়বিন্নি গ্রামে মারামারিতে আহত হয়ে তিনজন রোগী হাসপাতালে আসেন। এর মধ্যে আলতাফ হোসেন বিশ্বাস মারা যান। মাথায় আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে এই সংঘর্ষ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে সামাজিক বিরোধ রয়েছে।
চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন বলেন, জামায়াত-বিএনপির লোকজন অতর্কিত হামলা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে বেড়বিন্নি গ্রামে সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েক জন আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে একজন মার যান। এ ঘটনায় রায়হান নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার বিকাল পর্যন্ত কোনও মামলা করা হয়নি।
এসআইএইচ