পরশুরামে শিশু হত্যা মামলায় চাচীর যাবজ্জীবন
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নে ভাতিজা তরিকুল ইসলাম (৩) হত্যা মামলায় চাচীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে এ রায় দেন জেলা ও দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা।
এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ। অপরদিকে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল ছাত্তার। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।
পিপি হাফেজ আহাম্মদ জানান, বুধবার (২৩ মার্চ) জেলা ও দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার আসামি আরজিনা আক্তারের পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ১৪ মার্চ মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই রিয়াউল জব্বার ও পুলিশ কনস্টেবল রঞ্জন চাকমার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব সমাপ্ত করেন আদালত। এই মামলার ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট, চিকিৎসক ও বাদীসহ ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. কামাল উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামে বাড়ির পাশের জমির আইল থেকে তরিকুল ইসলাম নামে তিন বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই শিশু দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের মাওলানা আবু বকরের একমাত্র ছেলে। এ ঘটনায় শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে পরশুরাম মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন দুপুরে সন্দেহভাজন হিসেবে চাচী আরজিনা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার করে তদন্তকারি কর্মকর্তা ও পরশুরাম মডেল থানার তৎকালীন ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান। একই বছরের ২৪ নভেম্বর বিকালে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তানিয়া ইসলামের আদালতে আরজিনা আক্তার (৩৫) কে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান ছাগলনাইয়া থানায় বদলি হলে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই রিয়াউল জব্বারকে।
এরপর ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আরজিনাকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই রিয়াউল জব্বার। আদালত ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর চার্জ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি এ মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তদন্তকারি কর্মকর্তাসহ এ মামলায় ২৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
এসআইএইচ