মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ, পথচারীদের ভোগান্তি
পটুয়াখালীর প্রধান সড়ক প্রশস্থ হওয়ার পাশাপাশি ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন ও দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি যে কাউকেই আকৃষ্ট করবে। তবে এর সবকিছুই মলিন হয়ে যায় পৌর শহরে ঢুকতে। ময়লার স্তূপে ভরে গেছে সড়কের পাশ।
পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কের লাউকাঠী ব্রিজের পূর্বপাশে খালি স্থানে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা ফেলছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এতে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও স্থানীয়রা। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌরসভা নিজস্ব ডাম্পিং এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যাওয়ায় পথে ব্রিজের পূর্বপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সেই স্তূপে জ্বলছে নিভু নিভু আগুন। একদিকে বাতাসে ছড়াচ্ছে ময়লার দুর্গন্ধ অন্যদিকে আগুনের ধোঁয়ায় পুরো এলাকা আচ্ছন্ন। সড়কে চলাচলকারী সবাইকে নাকে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ শিশুদের সব থেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে ময়লা-আবর্জনার কারণে এই এলাকায় বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। এ জন্য এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ করলেও তেমন কোনো প্রতিকার মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব গাজী বলেন, ‘এই স্থানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য পৌর মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের কয়েক দফা অনুরোধ জানিয়েও প্রতিকার মেলেনি। কী আর করার এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে হয়তো বাসাবাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে যেতে হবে।’
অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘যখন কোনো যাত্রী নিয়ে এই রাস্তা দিয়া যাই সবাই কয় ঘুইরা ওই রাস্তা দিয়া যাও। কিন্তু ভাড়া কেউ তো আর বেশি দেয় না। এরপরও ঘুইরা যাইতে হয়। এহন এক হাত দিয়া হ্যান্ডেল ধরি আর এক হাত দিয়া নাক চাইপ্পা চলাচল করি, কি করার আছে। পৌরসভার উচিত যে এলাকায় মানুষজন কম হেই এলাকায় এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলা।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এর আগে পটুয়াখালী পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের ময়লা-আবর্জনা বিসিক এলাকায় নদীরপাড়ে ফেলত। তবে নদী কমিশন নদীতে বর্জ্য ফেলতে নিষেধ করেছে। তাই পৌরসভা এখন ব্রিজের পাশে
ময়লা-আবর্জনা ফেলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে জেলার অন্য পৌরসভার পরিস্থিতিও এমন। জেলার পাঁচটি পৌরসভার কোনোটিতেই নিজস্ব কোনো ডাম্পিং জোন নেই। এ কারণে সবাই পৌর এলাকার বর্জ্য সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখছে। অনেক পৌরসভা আবার এসব বর্জ্যে আগুন ধরিয়ে ময়লা-আবর্জনা কমানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, পটুয়াখালী একটি পুরাতন পৌরসভা হলেও বিগত দিনে ময়লা- আবর্জনা ফেলার জন্য কোনো ডাম্পিং জোনের ব্যবস্থা হয়নি। তবে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে আমি আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব একটি ডাম্পিং জোন তৈরির জন্য শহরের পূর্বদিকে লোহালিয়া ইউনিয়নে সাত একর জমি অধিগ্রহণ করেছি। সেখানে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য ডিজাইন ও ড্রয়িং সম্পন্ন হয়েছে।
মেয়র আরও বলেন, লোহালিয়া নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ শেষ হলেই আধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব এ ডাম্পিং জোনের কাজ শুরু হবে। এটি চালু হলে বাউফল এবং গলাচিপা পৌরসভাও তাদের ময়লা-আবর্জনা এখানে ফেলতে পারবে।
এসআইএইচ