বরগুনায় সিরিয়ালের নামে ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি
বরগুনার আমতলী ফেরিঘাটে যাবাহনের সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদাবাজদের হাত থেকে ভ্যান ও রিকশাচালকরাও রেহাই পাচ্ছে না।
বরগুনা থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আসা-যাওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাট এটি। এই ঘাট দিয়ে বরগুনা, বেতাগী, বরিশাল, খুলনা, পিরোজপুর, যশোর, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলার ভারি যানবাহন চলাচল করে।
অভিযোগ রয়েছে, আমতলী ফেরিঘাট এলাকায় মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের নামে ফেরি পারাপারে আসা বাস, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে প্রতিদিন জোরপূর্বক ২০ থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে আমতলী ফেরিঘাটে গেলে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় চালকদের হাতে 'বরগুনা জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন' লেখা সম্বলিত ২০ টাকার টোকেন ধরিয়ে দিতে দেখা যায়।
আনোয়ার হোসেন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, 'এই পথে যাতায়াত করতে গেলে প্রতিবারই সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের নাম করে শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজনকে ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। আর চাঁদা না দিলে চাঁদা আদায়কারী লোকজনের কাছে চরম নাজেহাল হতে হয়।'
এদিকে চাঁদা আদায়কারীদের প্রধান মোহাম্মদ আলী বলেন, 'ঘাটে পৌঁছানোর পর ফেরিতে উঠা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং আগে উঠা নিয়ে প্রায়ই বাস-ট্রাক শ্রমিকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। তাই সিরিয়াল মতো যানবাহন উঠানো হচ্ছে। এ জন্য ১০ টাকা করে বকশিস নেওয়া হয়। এ কাজের জন্য আমরা এক বছরের জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে ইজারা নিয়েছি।'
তবে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. জব্বার বলেন, 'আমতলী ফেরিঘাটে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কাউকে ইজারা বা নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আমার জানা মতে ওখানে কোনো চাঁদা উঠানো হয় না।'
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, 'এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তাদের ডেকে নিষেধ করব।'
এ প্রসঙ্গে আমতলী থানার ওসি একে এম মিজানুর রহমান বলেন, 'বিষয়টি আমি জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।'
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, ওই ফেরিঘাটের সিরিয়ালের ব্যাপারে কোনো ইজারা দেওয়া হয়নি। এ সময় বিধিগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এসআইএইচ