সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাহানারার স্বজনরা বাকরুদ্ধ
শরীয়তপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাহানারা বেগমের গ্রামের বাড়ীতে সবাই যেন বাকরুদ্ধ। বড় ভাই আলহাজ্ব আশ্রাফ আলী খা শুধু তাকিয়ে আছে কোন কথা বলতে পারছেন না। চোখের পানি মুছে শুধু বলল, 'কী হয়ে গেল আমার বোনের'। বোনের মেয়ে লুৎফুন নাহার ক`দিন আগে ফোন করে নানা নানীর মৃত্যুর তারিখ জেনে নিছে আশ্রাফের কাছ থেকে।
মঙ্গলবার সকালে মোবাইল ফোনে বোন আর বোনের মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে অচেতন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া আনারসিয়া গ্রামের ওই বাড়ীতে কথা হয় আশ্রাফের সঙ্গে। সকাল থেকে ওই বাড়ীর স্বজনদের মধ্যে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করতে থাকে। কথা হয় জাহানারার চাচাত ভাই মাসুদ রানার সাথে। কান্না জড়িত কন্ঠে মাসুদ রানা জানান, বিয়ের পর স্বামী লতিফ মল্লিক আমেরিকা চলে যায়।
এরপর তারা সবাই আমেরিকা প্রবাসি হয়। সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত জাহানারার মেয়ে লুৎফুন নাহার তিনমাস আগে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসে। রাজধানী ঢাকা আর বরিশাল বিএম কলেজ এলাকায় আলাদা বাড়ী রয়েছে। পনের বছর ধরে বরিশালের ওই বাড়ীতেই জাহানারা বসবাস করতো। তার মেয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা থেকে বরিশালে আসে। রাতে জাহানারা মিনিস্ট্রোক করলে বরিশাল শেবাচিমে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকায় রেফার করলে ভোরে পরিচিতজনদের সঙ্গে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে শরীয়তপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় এম্বুলেন্সে থাকা ৬জনই ঘটনাস্থলে মারা যান।
মাসুদ রানা জানান, এম্বুলেন্স চালক, একজন স্বাস্থ্যকর্মী ও মাসুদ নামে একজন সংবাদকর্মী সবাই জাহানারার স্বজন তবে তাদের বিস্তারিত পরিচিয় তিনি জানেন না। জাহানারার ভাইর বউ কুলসুম বেগম জানান, খুবই ভদ্র মহিলা ছিল জাহানারা। সব সময় হাসি খুশী থাকতো। মহুর্তের মধ্যে একটি পরিবার শেষ হয়ে গেল। জাহানারা ও তার মেয়ের লাশ কোথায় দাপন করা হবে তা এখনও সিদ্বান্ত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন জাহানারার বড় ভাই আশ্রাফ খা।
কাছিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, ঘটনা শুনে সাথে সাথে গ্রামের চৌকিদারকে পাঠানো হয়েছে ওই বাড়ীতে। আমরা সার্বক্ষনিক খোজ খবর রাখছি। লাশ বাউফলে আসলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দাপনের ব্যবস্থা করা হবে।
জানতে চাইলে বাউফল থানার ওসি আল মামুন জানান, খোজ খবর নিচ্ছি এখন পর্যন্ত মা ও মেয়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকীদের পরিচয় এখনও মেলেনি। পরবর্তিতে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দেয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএজেড