এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার আড়ালে কিন্ডারগার্টেন ব্যবসা!
বরগুনার পাথরঘাটায় এমপিওভুক্ত কালমেঘা দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে ইবতেদায়ী মাদ্রাসার নাম বাদ দিয়ে এর আড়ালে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ওই মাদ্রাসাতেই কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে কালমেঘা ইউনিয়নে অবস্থিত ওই মাদ্রাসার সামনে যেতেই নজরে আসে একটি সাইনবোর্ড। প্রতিষ্ঠানটির নতুন পরিচয় হিসেবে এতে লেখা হয়েছে কালমেঘা কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা। এ বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা মিললেও সুপার জালাল আহমেদ দাবি করেছেন তিনি কোন অনিয়ম করেননি। একাডেমী সুপারভাইজারের সাথে আলোচনা করেই ওই কিন্ডারগার্টেন খোলা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফারুক বলেন, এমপিওভুক্ত কালমেঘা দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখাটি বন্ধ রেখে কালমেঘা কিন্ডারগার্টেন নামে শাখা খুলে শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে এবং ইবতেদায়ীর শিক্ষকদের দিয়ে কিন্ডারগার্টেনে ক্লাস করাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান সুপার। ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাসেই কিন্ডারগার্ডেন শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন ইবতেদায়ী শিক্ষকরা।
অভিভাবক রাকিবুল বলেন, এমপিওভুক্ত একটি মাদ্রাসায় আলাদা দুইটি শাখা খুলে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন সুপার। ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীরা প্রাপ্য শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।কিন্ডারগার্ডেন শিক্ষার্থীদেরই বেশি খেয়াল নিচ্ছেন শিক্ষকরা।
প্রতিষ্ঠানটির ইবতেদায়ী শাখার শিক্ষক আবদুল কাদের মামুন বলেন, মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী শাখা থাকলেও সুপার স্যারের উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন শাখা খোলা হয়েছে। যদিও আমাদের ইবতেদায়ী শাখায় শিক্ষক সংকট, মাত্র তিনজন শিক্ষক। দিনদিন শিক্ষার্থীও কমছে, শেষ বছরে মাত্র সাতজনে নেমেছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। তাই সুপার স্যার কিন্ডারগার্টেনে ক্লাস নিতে বলেছেন।
কিন্ডারগার্টেন শাখার দায়িত্বরত শিক্ষক মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, সুপার স্যার বলেছেন কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে ৩০০ টাকা ও মাসিক বেতনও ৩০০ টাকা নির্ধারন করলে ভালো হয়। সেভাবেই এগোচ্ছি, শিক্ষার্থীদের সাড়া পেতেও শুরু করেছি।
মাদ্রাসাটির সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটি ও একাডেমিক সুপারভাইজারের সাথে আলাপ করে কিন্ডারগার্টেন শাখা পরিচালনা করছি। মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এটা করা হয়েছে।
মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি এম মতিউর রহমান বলেন, এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠানে কিন্ডারগার্ডেন করার নিয়ম আছে কিনা আমার জানা নেই। এর আগেও সুপার জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে। পাথরঘাটার একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুজ্জামান বলেন, মাদ্রাসার ইবতেদায়ী শাখার সাথে কিন্ডারগার্ডেন শাখা চালানোর বিষয়টি জানতাম না। আমারা কোন অনুমতি দেইনি তাদের।
এএজেড