রেকর্ডীয় বলে ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠান, খাস বলে উচ্ছেদ

গত দুই সপ্তাহ ধরে বেতাগীর খাসকাচারি মাঠ এলাকায় জমি নিয়ে চলছিল স্থানীয় মারুফ রেজা ও প্রশাসনের দ্বন্দ্ব। বছরের শেষ দিনে সরকারি খাস জমি দাবি করে তা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসন জানায়, জমি পাওয়ার দাবী নিয়ে সরকারি জমির একটি অংশ দখল করে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করেছিলেন ব্যবসায়ী মারুফ রেজা। তবে দোকান ঘর সরিয়ে নিতে সময় দেয়া হলেও তিনি জমি দখল করে রাখেন।
পরে আজ শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এসময় ১৪৪ ধারা জারি করে পুরো খাসকাচারি মাঠ এলাকা পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কেউ মাঠে প্রবেশ করতে পারেনি। পুরো মাঠে সবজি সাজানো থাকলেও ছিল না বেচাকেনা। মাঠে বসা ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে বসে সময় কাটালেও কপালে ছিল চিন্তার ভাজ।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন অনেকে। ব্যবসায়ীদের দাবি, কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই এ অভিযান চালানো হয়েছে। বাজারের দিন এমন অভিযান পরিচালনা করায় লোকসানে পড়েছেন তারা। এরকম ভুক্তভোগী মাঠের ত্রিশ জনের বেশি সবজি বিক্রেতারা।
সবজি বিক্রেতা আনিসুর বলেন, আমরা আগে জানলে মহাজনের কাছ থেকে মাল আনতাম না। সকালে সব সাজিয়ে বসার পরপরই পুলিশ এসে উঠিয়ে দেয়। এতে দশ থেকে বারো হাজার টাকার লোকসান গুনতে হবে আমার। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন তিন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। তারা হলেন- মো. মাহফুজুর রহমান, ফয়সাল আল নুর ও জাহিদুর রহমান।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকারি খাস জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করেছিল মারুফ রেজা। তাকে দোকান ঘর সরিয়ে নিতে সময় দেওয়া হলেও তিনি দখল করে রাখলে আজ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দখল মুক্ত করা হয়।
এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের পর বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মারুফ রেজা। এসময় তিনি ওই জমির মালিকানা দাবি করে বলেন, আমার বৈধ রেকর্ডীয় সম্পত্তিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঐ জমি খাস দাবী করলে আমি আদালতের সম্মূখীন হই। আদালত জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম সার্ভেয়ার নিয়ে একক ভাবে আমার জমি রাস্তায় উল্লেখ করে আমাকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেন। গত ২৮ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য সময় নেয়া হলেও সময় অতিক্রমের আগেই আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুহৃদ সালেহীন বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে যেখানে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নেই বলে তিনি দাবী করেন।
এএজেড
