বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে যত আতঙ্ক
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আগামী ৫ অক্টোবর। তার আগেই সরকার দলীয় নেতারা এই সমাবেশ বানচাল করার জন্য বরিশালকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। এ নিয়ে চায়ের দোকানসহ পথে ঘাটে বিভিন্ন মহলের মানুষের মধ্যে চলছে কথাকথি।
ঢাকাপ্রকাশের সঙ্গে ফোনালাপ কালে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, বরিশালে বিএনপির সমাবেশ বানচালের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তবে সব বাঁধা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের গণসমাবেশে জনসমুদ্রের জোয়ার হবে। পুরো বঙ্গবন্ধু উদ্যানের আশেপাশেও মানুষ দাঁড়নোর জায়গা হবে না।
বরিশাল বিএনপির নেতাকর্মীরা নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান সমাবেশ স্থল হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসক বরারর। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অনুমতি পায়নি। অন্যদিকে আইনী-নিরাপত্তার চেয়েও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা। নিরাপত্তা পাবে বলে আশা করেছেন বিএনপি নেতারা। আইনী সহাতয়তা চাইতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার ভালো ব্যবহার করেছেন বলেও জানিয়েছন মনিরুজ্জামান ফারুক।
বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এদিকে এই সমাবেশে যোগ দিতে বরিশাল বিভাগের সকল জেলা দিয়ে সমর্থক নেতাকর্মীদের আসার কথা রয়েছে। তাই তাদের বাঁধা দিতে সমাবেশের আগেই বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার দলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকা বাস মালিক গ্রুপ। তবে লঞ্চ চলাচলসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে খেয়া পারাপারও বন্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেছেন, সমাবেশ স্থলের জন্য ডেকরেশন, সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া, হোটেল বুকিং নিতে গেলেও কেউ দিতে রাজি নয়। এখন লঞ্চ বন্ধেরও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকানোর জন্যই বিএনপির সাথে এমন ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সমাবেশে যোগ দিতে ইচ্ছুক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালীর জেলা গুলোসহ বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার সমর্থক ও নেতার্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেবেন। যদি বরিশালকে পুরো বিচ্ছিন্ন করা হয় তবে দরকার হলে তারা পায়ে হেঁটে সমাবেশে যোগ দিবে বলে জানান তারা।
এদিকে সমাবেশকে সফল করতে বরিশাল নগরীতে প্রতিদিন প্রচার-প্রচারণা হিসেবে লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনগুলো। বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নানা তালবাহানা করবে এমন ধারণা আগেই করেছিলাম।
ঠিক অন্যান্য বিভাগের সমাবেশের মত বরিশালেও গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিভাগের সকল জেলার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশ শুরুর আগেভাগেই উপস্থিত হবে। দরকার হলে সকলে পায়ে হেঁটে আসবেন। আগামী ৫ অক্টোবর সরকারের সকল বাধা উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের গণসমাবেশে জনসমুদ্রের জোয়ার হবে।
তবে সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে বরিশাল থেকে ডেকরেশন, সাউন্ড সিস্টেম যদি না পাওয়া হয় তবে অন্যত্র ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে হোটেল বুকিং এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আহ্বায়ক বলেন, এখন তো যেখানে যাবো সেখাইনেই বাঁধা হবে। তাই অন্য যে কোনো উপায়ে সব কিছুই ম্যানেজ হবে। আর সমাবেশ সফল করতে আমরা সবকিছুই করবো। বঙ্গবন্ধু উদ্যানের অনুমতি পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছি। আশা করি অনুমতি পাবো।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে সদর রোডের দলীয় কার্যালয় চত্বরে গণসমাবেশ সফল করতে সমাবেশ এবং লিফলেট বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ইয়াসিন আলী। এ সময় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতিদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
উল্লেখ্য- ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করার দাবিতে আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ না হলে ৪ ও ৫ নভেম্বর বরিশাল থেকে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ।
এএজেড