‘একজন জেলেও ছিল না সাগরে, নিষেধাজ্ঞাই আশীর্বাদ’

উপকূলে চালানো ধ্বংসযজ্ঞের চেয়ে গভীর সমুদ্রে বেশ ভয়ঙ্কর ছিল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। তবে সমুদ্রে মাছ শিকারে চলমান নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে এবারের এই ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রগামী জেলেদের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি। এমটাই মনে করছেন উপকূলীয় বরগুনার জেলেরা।
সংশ্লিষ্টরা সূত্রে জানা যায়, মা ইলিশ রক্ষায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য সাগর ও নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। আর এই নিষেধাজ্ঞার ১৮তম দিনে দেশের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকায় বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে না গিয়ে আগে থেকেই তীরে নিরাপদে অবস্থান করছিলেন সমুদ্রগামী জেলেরা। এতে করে এবার ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন জেলেরা।
তালতলী উপজেলার জেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, সামান্য ঝড়েও সাগরে টিকে থাকা দায়। চুবানি খেতে হয়। কিন্তু এবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সাগরে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হওয়ায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে আমাদের জেলেরা।
পাথরঘাটা উপজেলার জেলে আমিনুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া। এই প্রথম কোনো সিগন্যালের সময় আমরা সাগরে ছিলাম না। থাকলে এবার হয় ডুবে যেতাম, নয়তো কোথাও ভেসে যেতাম।
জেলা মৎসজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, দুর্যোগের জেলা হলেও বরগুনায় কোনো আবহাওয়া অফিস নেই। তাই ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমরা দ্রুত সঠিক পূর্বাভাস পাই না। যার কারণে সমুদ্রগামী জেলেদের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবার নিষেধাজ্ঞা ছিল বিধায় জেলেদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। একজন জেলেও ছিল না সাগরে, নিষেধাজ্ঞাই আশীর্বাদ।
উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার মূল কেন্দ্র উপকূলীয় বরগুনা থাকলেও পার্শ্ববর্তী ভোলা উপকূল দিয়ে অতিক্রম করে। আর এ ঝড়ের আঘাতে বরগুনা সদরে ঘরের উপর গাছ পড়ে শতবর্ষী এক বৃদ্ধা নিহত হন। তবে ফসলি জমি ও বেড়িবাঁধের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
এসআইএইচ
