জুমার দিনের জানা-অজানা আমল
আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এক মহান ও ফজিলতের দিন হিসেবে শুক্রবার দিনটিকে দান করেছেন। কিন্তু কিছু অজ্ঞতা এবং অতি ধর্মীয় কিছু অনুভূতি থেকে আমরা এ দিনে এমন কিছু আমল করি যার সমর্থনে পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে কোনো দলিল খুঁজে পাওয়া যায় না। যেমন...
শুক্রবারে কবর জিয়ারত করা
কবর জিয়ারত করা সুন্নত। সাধারণত শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা গোরস্থানে কবর জিয়ারত করতে যান এবং সেখানে যথেষ্ট ভিড় সৃষ্টি করেন। এ সম্পর্কে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, শুক্রবার জুমার সালাতের পর অবসর রয়েছে। সুতরাং এ সময় কোনো ব্যক্তি কখনো কখনো কবর জিয়ারত করতে পারেন। কিন্তু এটাকে শুক্রবারের অবশ্য করণীয় কাজ বা এটাকে সুন্নত বানিয়ে ফেলার কোনো সুযোগ নেই।
শুক্রবারে নফল রোজা রাখা
শুক্রবার হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ১০৯৮)। নফল রোজা রাখার জন্য শুক্রবারকে নির্ধারণ বা নিদিষ্ট করে নেওয়া নিষেধ। তবে কেউ যদি বৃহস্পতি এবং শুক্রবার অথবা শুক্র ও শনিবার রোজা রাখেন অথবা আইয়ামুল বিজের অর্থাৎ প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে যদি রোজা পালন করেন, আর সেটা করতে গিয়ে যদি শুক্রবারে পড়ে যায়, তবে তা জায়েজ। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ জুমার আগে বা পরে একদিন মেলানো ব্যতিত শুধু জুমার দিন রোজা রেখো না (সহীহ বুখারী, হাদিস নং: ১৮৮৪, মুসলিম, হাদিস নং: ২৫৪৫)।
শুক্রবারে মৃত্যু হলে জান্নাত
অনেকেই এ কথা বলে থাকেন যে, শুক্রবারে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় সুতরাং এ দিন কেউ মৃত্যুবরণ করলেই বিনা হিসেবে জান্নাতে চলে যাবেন। কিন্তু এ মর্মে কোনো দলিল কোরআন বা হাদিস কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যেকোনো মুসলমান জুমার দিনে কিংবা জুমার রাতে মৃত্যুবরণ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন (তিরমিজী, হাদিস নং: ১০৯৫, মিশকাত, হাদিস নং: ১৩৬৭)।
জুমার পরে জোহরের সালাত
অনেকেই এ কথা বলে থাকেন যে, বাড়িতে মহিলাদের জোহরের সালাত জুমার পরে পড়তে হবে। কিন্তু ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, যেহেতু মহিলাদের জন্য জুমার সালাত ওয়াজিব নয় সুতরাং ওয়াক্ত হলেই তারা বাড়িতে জোহরের সালাত আদায় করতে পারবেন। এর জন্য তাদের জুমার খুতবা বা সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই।
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রত্যেকটি আমল জেনে-বুঝে করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
আরএ/