বৃষ্টির পানি থেকে ইসলামের শিক্ষা
দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান সৃষ্টিরাজি থেকে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে শিক্ষাগ্রহণের আদেশ করেছেন। সৃষ্টির প্রতিটি অঙ্গজুড়েই তিনি রেখেছেন শিক্ষার বিচিত্র উপাদান। রয়েছে আল্লাহ তায়ালার একত্ববাদ ও তাওহিদের মহান শিক্ষা।
বৃষ্টি এবং পানি আল্লাহ তায়ালার মহান দান। পানি ছাড়া পৃথিবীর অস্তিত্ব অকল্পনীয়। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে পানি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টির বিচিত্রময় দিক আলোচনা করেছেন। বৃষ্টির পানিতে শুষ্ক জমি সিক্ত ও জীবন্ত হয়। অনুর্বর জমিতেও ফল-ফসল উৎপাদিত হয় পানির গুণে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তা ভারী মেঘমালাকে বয়ে নিয়ে যায়, তখন আমি তাকে কোনো মৃত ভূখণ্ডের দিকে চালিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সেখানে পানি বর্ষণ করি এবং তা দ্বারা সবরকম ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরও জীবিত করে তুলব। হয়তো তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে।’ (সুরা আরাফ: ৫৭)
এ আয়াতের মাধ্যমে মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবন দানের কথা প্রমাণিত হয়। ভূমি শুকিয়ে গেলে তা নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। জীবনের সব আলামত তা থেকে মুছে যায়। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে নবজীবন সঞ্চার করেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি পবিত্র পানি। তা দ্বারা মৃত ভূমিকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করানোর জন্য।’ (সুরা ফুরকান: ৪৮-৪৯)
বৃষ্টি ও নদনদীর পানিতে সিক্ত জমিতে সৃষ্টি হয় হাজারো রকমের ফলমূল। প্রতিটির রস-স্বাদ ভিন্ন। আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘আর পৃথিবীতে আছে বিভিন্ন ভূখণ্ড, যা পাশাপাশি অবস্থিত। আর আছে আঙ্গুরের বাগান ও খেজুর গাছ, যার মধ্যে কতক একাধিক কাণ্ডবিশিষ্ট এবং কতক এক কাণ্ডবিশিষ্ট। এসব একই পানি দ্বারা সিঞ্চিত হয়। আমি স্বাদে তার কতককে কতকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এসব বিষয়ের মধ্যে সেসব লোকের জন্য নিদর্শন আছে, যারা বুদ্ধিকে কাজে লাগায়।’ (সুরা রাদ: ৪)
পানি ছাড়া মানুষ, জীব, গাছপালা ইত্যাদি যেমন বেঁচে থাকতে পারে না; তেমনি পানি-বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিজীবকে ভয়ঙ্কর আজাবে নিপতিত করতে পারেন, ধ্বংস করে দিতে পারেন সুরম্য প্রাসাদ, সজ্জিত জনপদ ও নগর-গ্রাম। হজরত নুহের (আ.) অবাধ্য কওম ও পুত্রের ক্ষেত্রে বর্ণিত হয়েছে, ‘সে বলল, আমি এখনই এমন এক পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি থেকে রক্ষা করবে। নুহ বলল, আজ আল্লাহর হুকুম থেকে কাউকে রক্ষা করার কেউ নেই, কেবল সেই ছাড়া যার প্রতি আল্লাহ দয়া করবেন। অতঃপর ঢেউ তাদের বিচ্ছিন্ন করে দিল এবং সেও নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হলো।’ (সুরা হুদ: ৪৩)
এসএ/