শবে কদরের আমল
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অর্থ মর্যাদাপূর্ণ রাত। আল্লাহতায়ালা মানব জাতির হেদায়াতের জন্য একশ চারখানা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। এর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ হলো কোরআনুল কারিম, যা সর্বশ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী মুহাম্মদের (সা.) উপর নাজিল করেছেন। আর এ মহাগ্রন্থ শবে কদরেই নাজিল করা হয়। তাই কোরআনুল কারিমের সম্মানেই এ রজনীর অশেষ ফজিলত রয়েছে।
এ রাতের ফজিলত বর্ণনায় বোখারি শরিফের এক হাদিসে রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘যে ঈমানের সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে লাইলাতুল কদরের রাতে ইবাদত করবে, আল্লাহ তার জীবনের পেছনের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’
এ রাতের উপস্থিতি কেউ জানতে পারলে তাকে নবীজি (সা.) বিশেষ এক দোয়া পড়তে বলেছেন। তবে রমজানের যে কোনো সময় সুন্দর অর্থপূর্ণ দোয়াটি পড়া যায়।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী দোয়া পড়ব? রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি বলবে–
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (ইবনে মাজা: ৩৯৮২; মুসনাদে আহমাদ; তিরমিজি)
মহিমান্বিত এ রজনীর সব নেয়ামত হাসিলের জন্য প্রথমেই শিরকমুক্ত ঈমান, পরিশুদ্ধ নিয়ত ও বিদায়াতমুক্ত আমলের মাধ্যমে রাত যাপন করতে হবে। কদর লাভের আশায় শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করার বিধান রয়েছে। এ সময়ে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া; তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া; কোরআন তেলাওয়াত করা; দোয়া-দরুদ, দান-সদকা ও তাওবা-ইসতিগফার করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
এ রাত যাপন উপলক্ষে বাজি-পটকা ফোটানো, অহেতুক কোনো অনুষ্ঠান বা মসজিদে কোনো ভোজের আয়োজন করা ইসলামসম্মত নয়। বরং বেশি বেশি নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে রাত কাটানোই শ্রেয়।
রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেল কিন্তু ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটাতে পারল না, তার মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই। সুতরাং শবে কদর তালাশ করে সঠিক ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রাত যাপনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
এসএ/