সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

 কর্মফল নিয়তে নির্ভর

কবিরা গোনাহকারীদের অধিকাংশ যদিও নফসে তাড়িত হয়ে স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে গোনাহ করে থাকে তবে তাদের ক্ষুদ্রাংশ কিন্তু পারস্পরিক কখনও সামাজিক, কখনও রাজনৈতিক, কখনও রাষ্ট্রীয় চাপে কবিরা গোনাহ করতে বাধ্য হয়। তাহাজ্জুদগুজারিদের বড় অংশ যদিও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় রাত জাগরণ করে থাকে। তবে একটা অংশ কিন্তু লোক দেখানো, পদ টিকানোর জন্য তাহাজ্জুদে দাঁড়ায়। যে উদ্দেশ্যেই কবিরা গোনাহ করুক না কেন, গোনাহকারী কিন্তু সমাজরে চোখে ঘৃণ্য। আবার যে উদ্দেশ্যেই তাহাজ্জুদে দাঁড়াক না কেন, দণ্ডায়মান ব্যক্তি কিন্তু সমাজের চোখে পুণ্যবান। আমরা অনেকাংশেই সমাজ, রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতির জন্য নিজের আমিত্বকে বিসর্জন দিই আবার ক্রন্দন করি। আমাদের উচিত সব ক্ষেত্রে নিজেদের আমিত্বকে টিকিয়ে রাখা, তবে অহংবোধে নয়। কাল কেয়ামতের মাঠে কিন্তু আপন আমির হিসাব দিতে হবে, সমাজ বা রাষ্ট্রের নয়।

রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় সব আমলের ফলাফল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ সুতরাং প্রত্যেক মানুষ (পরকালে) তাই পাবে যা সে নিয়ত করবে। যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রাসুলের উদ্দেশ্যে হিজরত করে, তার হিরজত আল্লাহ এবং তার রাসুলের উদ্দেশেই হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়া হাসিলের কিংবা কোনো নারীকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে হিজরত করে, তার হিজরত সেই উদ্দেশ্যেই গণ্য হবে যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বোখারি)

এই হাদিসের সঙ্গে একটি ঘটনাও উল্লেখ করা হয়, যখন মুসলমানরা মক্কার কাফের সম্প্রদায়ের দেওয়া জুলুম-নির্যাতন আর কষ্ট সহ্য করতে পারছিল না তখন মহান আল্লাহ তায়ালার হুকুমে হিজরত করে। সবার উদ্দেশ্য ছিল মদিনায় সহজভাবে মহান আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর আনুগত্য করা। তাই হিজরত করে মদিনায় গমন করেন। কিন্তু তাদের মাঝে একজন লোক এই কারণে হিজরত করে যে, হিজরতকারীদের মাঝে একজন মহিলা ছিল, ওই মহিলাকে বিয়ে করার জন্য সবার সঙ্গে হিজরত করে। এই কথা রাসুল (সা.) জানার পর তিনি বলেন- ‘যে আল্লাহ ও তার রাসুলের উদ্দেশ্যে হিজরত করেছে তার হিজরত সেই হিসেবেই গণ্য হবে, অর্থাৎ তারা উত্তম বিনিময় পাবে। আর যে দুনিয়া লাভ বা কোনো নারীকে বিয়ে করার জন্য হিজরত করেছে, তার হিজরতও সেভাবেই গ্রহণ করা হবে, পরকালে তার কোনো উত্তম বিনিময় থাকবে না।

পৃথিবীতে মানুষ নানা নিয়তে নানা কাজ করে থাকে। কেউ জ্ঞানার্জন করে নিজেকে জ্ঞানীরূপে জাহির করার জন্য, কেউ লেখালেখি করে নিজেকে লেখকরূপে হাজির করতে, কেউ হজ করে আলহাজ হতে, কেউ দান করে দানবীর হতে, কেউ পীর হয় হাদিয়া পেতে, কেউ দরবেশ হয় ভণ্ডামি করতে। বিচিত্র পৃথিবীতে কাজের ধরন এক, উদ্দেশ্য আরেক।

কেয়ামতের দিন তিনজনকে প্রথমে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে। তারা হলো জ্ঞানী, মুজাহিদ ও দাতা। আল্লাহ জ্ঞানী বা আলেমকে প্রশ্ন করবেন, ‘তুমি দুনিয়ায় কী করেছ?’ সে বলবে, ‘আমি আপনার জন্য জ্ঞান অর্জন করেছিলাম ও আপনার সন্তুষ্টির জন্য সেই জ্ঞান দান করেছি।’ তখন তাকে বলা হবে, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি জ্ঞান অর্জন করেছ যেন তোমাকে জ্ঞানী বলা হয়। তুমি যা চেয়েছিলে তা দুনিয়াতে পেয়ে গিয়েছ।’

তখন আদেশ করা হবে সেই জ্ঞানীকে দোজখে ফেলে দেওয়ার জন্য। দানকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ প্রশ্ন করবেন, ‘তুমি দুনিয়ায় কী করেছ?’ সে বলবে, ‘আমি আপনার জন্য হালালভাবে সম্পদ অর্জন করেছিলাম ও আপনার পথে তা দান করেছি।’ তখন তাকে বলা হবে, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি সম্পদ দান করেছ যেন তোমাকে দাতা বলা হয়।’ তুমি যা চেয়েছিলে তা দুনিয়াতে পেয়ে গিয়েছ। তখন আদেশ করা হবে সেই দাতাকে দোজখে ফেলে দেওয়ার জন্য। মুজাহিদকে প্রশ্ন করা হবে, ‘তুমি দুনিয়ায় কী করেছিলে?’ সে বলবে, ‘আমি আপনার জন্য মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করেছিলাম।’

তখন তাকে বলা হবে, ‘তুমি মিথ্যাবাদী। তুমি এজন্য লড়াই করেছ, যেন তোমাকে বীর যোদ্ধা বলা হয় ও তাই হয়েছে। তুমি দুনিয়াতেই তোমার পুরস্কার পেয়ে গিয়েছ।’ এরপর তাকে দোজখে ফেলে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে। মানুষ প্রচুর আমল করতে পারে; কিন্তু কবুলের প্রশ্ন আসবে ওইসব আমলে যেখানে ইখলাস আছে। যে আমলে ইখলাস নেই, তাতে কবুলের প্রশ্নই আসবে না। কারণ কবুল শুধু ওই আমলের সঙ্গে খাস করে দেওয়া হয়েছে যেখানে ইখলাসের ভারি উপস্থিতি আছে।

মোদ্দাকথা হলো, মানুষ যে কাজ করে, তা অন্তত তিনটি স্তরে সম্পাদিত হয় মানুষের অন্তরে। অন্তরের এই তিনটি ধাপ অতিক্রম না করে কোনো কাজই হওয়া সম্ভব নয়। কারও মনে যে কাজের কোনো ধারণাই নেই, যে কাজ সম্পর্কে কোনো জ্ঞান রাখে না, যে কাজ করার সিদ্ধান্ত অন্তরে নেই- তার পক্ষে সে কাজ করা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। মনের তিনটি স্তরের চূড়ান্ত স্তর বা শেষ স্তর হলো নিয়ত। সব কাজের ক্ষেত্রে এই নিয়তটাই মূল বিষয়। কারণ নিয়তটাই কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে আসল চালিকাশক্তি। আর নিজের কাজটাকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদন করার নাম হলো ইখলাস এবং ইখলাস ইমানের অংশবিশেষ। মোমিন ব্যক্তির জীবনের প্রতিটি কাজ হতে হবে একমাত্র মহান স্রষ্টা আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদিত। এটাই ইখলাসের সার কথা। এ কথার অর্থ এটা নয় যে, জীবনের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে সারাক্ষণ নামাজ, রোজা, তাসবিহ, তেলাওয়াত নিয়ে পড়ে থাকতে হবে।

মনে রাখা দরকার, মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ। আর আল্লাহই মানুষের জীবনকে প্রয়োজনের মুখাপেক্ষী করেছেন। তাই জীবন ও জগতের গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের নামই প্রকৃত ধার্মিকতা। নিজের প্রয়োজনে কাজটাকে মহান আল্লাহর বাতলে দেওয়া পথ ও পন্থায় সম্পন্ন করা এবং তাতে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের নিয়ত করাই ইখলাস। নিজের জীবনের কার্যাবলিকে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য করার মধ্যেই ঈমানের সব থেকে বড় পরিচয়। মহান আল্লাহ বান্দার আমলের বাহ্যিক আড়ম্বরের প্রতি বিন্দুমাত্র লক্ষ্য করেন না। বান্দার অন্তরের নিখাঁদ ইখলাসটুকুই আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একমাত্র কাম্য। এরশাদ হয়েছে, ‘বলে দাও, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ একমাত্র সমগ্র জগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য নিবেদিত, তার কোনো শরিক নেই। আমি এ বিষয়েই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম আনুগত্যকারী।’ (সুরা আনআম : ১৬২-১৬৩)। মোমিন বান্দা তার আমলের সওয়াব বা পুরস্কার কতটুকু পাবে সেটা নির্ভর করে তার নিয়তের ওপর। অর্থাৎ নিয়ত দ্বারাই আমলের মান নির্ধারিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমলের বিনিময় বা সওয়াব নির্ধারিত হবে নিয়তের ভিত্তিতে। আর প্রত্যেক ব্যক্তি সেরকমই সওয়াব পাবে যেরকম সে নিয়ত করেছে।’ (বোখারি)। ‘ইন্নামাল আলামু বিন্নিয়্যাত।’ নিয়তগুণে কর্ম- হাদিসটি বিশেষভাবে ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ ছোট্ট একটা ভালো কাজ নিয়তের কারণে সীমাহীন সওয়াব এনে দেয়। আবার অনেক বড় ইবাদাতও গোনাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হজরত আবু উমামা বাহেলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ কেবল বান্দার সে আমলকেই গ্রহণ করবেন, যা একমাত্র তাঁর উদ্দেশ্যে নিবেদিত এবং যে আমলটা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’ (নাসায়ি)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একটা হাদিস বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদের চেহারা ও সম্পদ দেখেন না, তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর এবং তোমাদের আমল।’ (মুসলিম)। নিয়তের যে বিশুদ্ধতা বান্দার আমলকে আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য করে তোলে, সেটা বান্দার ঈমানের অংশ। এ বিষয়টি একটি হাদিসে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে।

হজরত আবু ফেরাছ (রা.) থেকে বর্ণিত, (আবু ফেরাছ ছিলেন আসলাম গোত্রের লোক) তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! ইমান কি?’ উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘ইখলাসই হলো ঈমান’ (বায়হাকি)। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মোমিন ব্যক্তির নিয়ত, তার আমল অপেক্ষা উত্তম।’

আসলে নিয়ত হলো অন্তরের আমল। আর নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতসহ যাবতীয় ইবাদত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল অন্তরের আমলকেই প্রকাশ করে। অন্তরের আমল হয় আগে এবং অন্তরের আমলের পথ ধরেই আসে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আমল। তাই অন্তরের আমল তথা নিয়তের মূল্যই বেশি। আর মহান আল্লাহ বান্দাকে এই অন্তরের আমলকেই পরিশুদ্ধ করতে আদেশ করেছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘তারা তো কেবল ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদাত করতে, একনিষ্ঠভাবে নামাজ কায়েম করতে, জাকাত প্রদান করতে আদিষ্ট হয়েছে। আর এটাই খাঁটি ধর্ম।’ (সুরা আল বায়্যিনাহ : ৬)। মহান প্রভু আমাদেরকে নিয়তের বিশুদ্ধতাপূর্বক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।



লেখক:
মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
শিক্ষার্থী,ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র:রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে