নসরুল হামিদের ৯৮ ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন: দুদকের মামলা
সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ছবি: সংগৃহীত
৯৮টি ব্যাংক হিসেবে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ৬ হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি। মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।
এজাহারে বলা হয়, নসরুল হামিদ ২০০৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিজ নামে ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৩ হাজার ৫৮ কোটি টাকা জমা এবং ৩ হাজার ১৮০ কোটি টাকা উত্তোলন করেন, যা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন।
এ ছাড়া আয়কর নথি অনুযায়ী নসরুল হামিদের পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় মোট ১১ কোটি ৭২ লাখ ৬৭ হাজার ২৪০ টাকা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অতিরিক্ত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া গেছে, যা তাঁর আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ও দুদকের আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এর আগে গত অক্টোবরে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ ৩ প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায় দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান দল।
সেসময় সংস্থাটি জানায়, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। শত কোটি টাকার দুর্নীতি ও অর্থপাচারের প্রমাণও পাওয়া যায় তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর সম্পদ বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ।
ত্রিপুরা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার
ছবি: সংগৃহীত
বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই তংগোঝিরি পূর্ব-বেতছড়া এলাকার ত্রিপুরা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের পূর্ব বেতছড়া পাড়ার বাসিন্দা স্টিফেন ত্রিপুরা (৫০), মইশৈ ম্যা ত্রিপুরা (৪৮), তংগোঝিরি পাড়ায় বাসিন্দা জোয়াতিং ত্রিপুরা (৫২) ও মো. ইব্রাহিম (৬৫)।
এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে তংগোঝিরি পূর্ব-বেতছড়া এলাকার ত্রিপুরা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৬টি পরিবারের ঘরবাড়ি পুড়ে যায়। পাড়ায় গির্জা না থাকায় বড়দিন উদযাপনের জন্য তংগোঝিরি নামের আরেকটি পাড়ার গির্জায় গিয়েছিলো পাড়ার লোকজন। এই সুযোগে দুর্বৃত্তরা ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাড়াবাসীর। অগ্নিকাণ্ডের পর বুধবার বিকেলে লামা থানায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন গঙ্গা মনি ত্রিপুরা নামে এক ব্যক্তি। মামলা পরে অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সচিবালয় কিভাবে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতা জানে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
গণভবন আর আদালতের মত সচিবালয় কেমন করে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতার খুব ভালো করেই জানা আছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর ভেরিফায়েড আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে একটার পর একটা ষড়যন্ত্র হয়েছে। িপ্রথমে জুডিসিয়াল ক্যুর চেষ্টা করা হলো। ছাত্ররা মাঠে নেমে সেটা রুখে দিলো। লীগ যখন আনসার হয়ে ফিরে আসছিলো, এই ছাত্ররাই তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মাঠে নেমেছে। এনসিটিবিতে বই না ছাপিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র হলো, সেটাও ছাত্ররা প্রতিহত করলো।
তিনি লেখেন, এখন যখন স্বৈরাচার হাসিনাকে সার্ভ করা দালাল মিডিয়া, সময় টিভির ক্যু রুখে দেয়ার জন্য ছাত্ররা এগিয়ে আসলো, তখনই চারদিকে শুরু হলো সুশীলদের আহাজারি । আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বাস্তবতাবিবর্জিত মিথ্যা ছড়ানো হলো। আমরা বারবার বলেছি যে আমরা কোন সাংবাদিকদের লিস্ট দেইনি। অথচ এরপরেও পুরোপুরি বানোয়াট অভিযোগ তুলে আমাদের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাফিয়ারা ক্যু করলো। যে সময় টিভি যুগের পর যুগ বিএনপি, জামায়াত সহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী দলগুলোর ক্যারেকটার এসাসিনেশন করেছে, শহীদ আলিফকে হিন্দু ট্যাগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করেছে, জুলাই আন্দোলনকে টেরোরিস্টদের উত্থাণ বানিয়ে হাসিনার ছাত্র হত্যাকে নর্মালাইজ করেছে , ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা অভিযোগ করে ইমেজ নষ্ট করেছে, এমনকি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকে ডিলেজিটিমাইজ করার এটেম্প্ট পর্যন্ত নিয়েছে, আজকে তাদের জন্য সুশীলদের মায়া কান্নার শেষ নেই। প্রতিবাদ করতে যাওয়া ছাত্ররা আমরা হলাম খারাপ, আর এদের কুকীর্তিকে সমর্থন দেওয়া সুশীলরা হয়ে গেল ভালো। এই সুশীলরাই কি গত ষোল বছর স্বৈরাচারের নুন-ঘি খেয়ে ফ্যাসিবাদকে পাকাপোক্ত করেনি? আমরা তো সেটার বিরুদ্ধেই কথা বলেছি।
হাসনাত আরও লেখেন, এখন ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসছে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা শেখ হাসিনার দোসরদের অপসারণ করে প্রকৃত দেশপ্রেমিকদের দায়িত্ব দেয়ার জন্য। কিন্তু সুশীলগিরি দেখিয়ে সরকার সেটি না করার পরিণতি গতকাল রাতে আমরা পেলাম। সরকারের কাছে অনুরোধ সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসেন। স্বৈরাচারের দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র থেকে দেশকে বাঁচান। দেশের জনগণকে বাঁচান।
হাসনাত লেখেন এই সরকার দুই হাজার মানুষের লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় বসা সরকার। এই সরকার সুশীলতার মধ্যে দিয়ে আসেনি, এসেছে ২ হাজার শহীদ আর ৩০ হাজার আহত ভাই বোনের রক্তের উপর দিয়ে। সেই রক্তের সাথে আপোষ করার কোন সুযোগ নেই। আমরা শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি একটা নতুন বাংলাদেশের জন্য, প্রশাসনলীগের হুমকি আর আগুন দেখার জন্য নয়। সরকারের কাছে অনুরোধ এদের হাত থেকে প্রশাসন মুক্ত করেন। যদি না করেন তবে গণভবন আর আদালতের মত সচিবালয় কেমন করে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতার খুব ভালো করেই জানা আছে।