বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

দেশ নিয়ে আমাদের যেভাবে ভাবতে হবে

ক্ষুদিরাম বসু একজন ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী কিশোর যিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। মাতা-পিতাহীন শিশুটি বাঙ্গালী মায়ের পরিচয়ে বেড়ে ওঠেন। এই দেশের মাটিই ছিলো তার মা। নির্দিষ্ট ভূ-খন্ড নয় বরং সমগ্র ভারতবর্ষকে ছেলেটি নিজের সম্পদ বলে মনে করতেন। এদেশের সকল মানুষকে নিয়েই ছিলো তার পরিবার। তাইতো কিশোর বয়সেই তার ভূ-খন্ড ও পরিবারকে ইংরেজ বাহিনীর শোষণ পীড়ন থেকে রক্ষা করতে হাতে অস্ত্র তুলে নেন। সাড়া ফেলেছেন ব্রিটিশ মহলে। এমনকি ব্রিটিশদের ঘুমও হারাম করেছেন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সে ফাঁসির কাষ্ঠ বরণ করেন।

আমরা ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের গল্প জানি। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করলেও ব্যক্তি সুখকে বরণ না করে তিনি সমগ্র বাঙ্গালীর সুখ বরণ করতে চেয়েছেন। জ্বলে উঠেছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা তিতুমীরের গল্প জানি। তিতুমীরের গল্প ও সাহসিকতার বয়ান তুলতে গিয়ে মুখে ফেনা তুলি। আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলার গল্প পড়তে পড়তে চোখে ছানি পেলেছি। মীর জাফরের নামটিকে গালি হিসেবে গ্রহণ করেছি। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আদর্শ হিসেবে পেশ করি। তাজ উদ্দিন আহমদ, কামারুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও মনসুর আলীর গল্প শোনাই এবং তাদেরকে শ্রদ্ধা করি। আবার খন্দকার মোস্তাকের নাম শুনলেই মুখে থুতু পেলি মন ভরে ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা বলি। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে উচ্চতর গবেষণা করি। চেতনায় বুদ হয়ে যাই।মুখে মুখে বাংলা মায়ের জন্য জীবন বিলাই। বক্তব্য দিতে গেলে জ্ঞান হারিয়ে পেলি। কে কার থেকে বেশি চেতনাময়ী বক্তব্য উপস্থাপন করবো সে প্রতিযোগিতায় নেমে যাই।

দেশকে ভালোবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। দেশ চেতনা আমাদের হৃদয়ের গভীরে সুপ্ত থাকে। দেশের ক্লান্তি, দুঃখ-দুর্দশা, দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে আমরা দেশের জন্য টান অনুভব করি। সে টান থেকেই ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার আন্দোলনে দেশের লাখো তরুণ অকাতরে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে। মনীষী জ্যাকসন বলেছেন, ‘যে মায়ের সন্তান দেশের জন্যে জীবন দিয়েছে, তার মাতৃত্বের গৌরব চির ভাস্বর। দেশপ্রেম থাকা চাই বৈদেশিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্যে। ইতিহাস বার বার এটাই প্রমাণ করেছে যে, দেশপ্রেমিক জাতি শত্রুর কাছে কখনও পরাজিত হয় না। সে জাতির অন্তরে জ্বলতে থাকে দেশপ্রেমের আগুন অনির্বাণ শিখার ন্যায়। সারা পৃথিবীর মায়া-মমতা, স্নেহ সব একত্রিত করলেও যেমন মায়ের অকৃত্রিম স্নেহের সঙ্গে তুলনা করা যায় না তেমনি সারা পৃথিবীর ঐশ্বর্য-বৈভব ও সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজ দেশের কোনো তুলনা হতে পারে না। কবি তার কাব্যে, দেশকর্মী তার সমাজসেবায়, গায়ক তার গানে, শিল্পী তার ছবিতে, বৈজ্ঞানিক তার বিজ্ঞান চর্চায়, শিক্ষক তার একনিষ্ঠ শিক্ষকতায় দেশপ্রেমের পরিচয় প্রদান করতে পারেন। কবি বলেছেন, ‘তুমি দেশকে যথার্থ ভালবাস তার চরম পরীক্ষা, তুমি দেশের জন্য মরতে পার কি-না।’ আমার দেশের ছেলেরা যুগে যুগে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা এদেশকে যথার্থ ভালোবাসে। তাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে তারা তৃপ্তির সহিত জীবন দিয়েছে।তাদের ভাবনা ছিলো আমার জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে আমার মত জীবন দিতে হবে না। মা-বোন ধর্ষিতা হওয়ার পরও হেরে যায়নি। তাদের ভাবনা ছিলো আমার ধর্ষিতা হওয়ার বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে ধর্ষিতা হতে হবেনা। বিধবার চিন্তা ছিলো আমার পর আর কাউকে বিধবা হতে হবেনা।

আফসোস যে আদর্শ আজ আমাদের মুখে মুখে। আমরা আমাদের বীরাঙ্গনা মায়ের স্বপ্ন, শহীদ ভাইয়ের চেতনা, বিধবা মায়ের আকুতিময় চাহনির মূল্য দিতে পারিনি। কথায় আছে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও তা রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের আজ বহিঃশত্রু নেই। আমরা নিজেরাই আজ নিজেদের শত্রু। রক্ষক আজ ভক্ষক। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রুটিরুজির উপকরণে পরিণত। জনগণকে চেতনার বড়ি খাওয়াইয়া নিজেরা নিজের মত করে দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছি। সর্বত্র দুর্নীতি। সরকারি অফিসের পিয়ন থেকে সর্বোচ্চ কর্তা পর্যন্ত প্রায় সবার বিরুদ্ধে দুর্নতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নন। দুর্নীতির এতোই ছড়াছড়ি যে, খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখি নৈতিক অবক্ষয়, অপহরণ, ছিনতাই, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ নানান সমস্যা। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে যতই স্বপ্ন দেখাবার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও তার কোনো সুফল দেখিনি।

রাজনৈতিক দল গুলো পরস্পরকে দোষারোপ করে কাঁদা ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে দেশের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছেন। সত্যিকার অর্থে আমাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বড়ই অভাব। এ কথায় কেহ বা মনোক্ষুন্ন হতে পারে, কেউবা বলতে পারে আমরা কি দেশকে ভালবাসি না? অবশ্যই আমরা সবাই দেশকে ভালবাসি। কিন্তু কিছু কিছু কুলাঙ্গার দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থটাকে অনেক বড় করে দেখে।যার ফলে দেশের আজ এই দুর্গতি।আমরা দেশটাকে নিজের করে ভাবতে ভুলে গেছি। দেশের মানুষকে নিজের আপন বংশের মানুষ মনে করতে ভুলে গেছি। নিজ পেটের ধান্ধায় সব ভুলে হিংস্র নেকড়ের রূপ ধারণ করেছি। আজ আমরা এতোই বেপরোয়া যে, যেন সুযোগ পেলে নিজ ভূখন্ডকে বিক্রি করে দিয়ে ইউরোপ আমেরিকায় গিয়ে অবস্থান নেই। নিজেকে নিজে ভালো রাখতে গিয়ে আমরা নিজেদের অস্তিত্বকে ভুলে গেছি। হারিয়ে পেলেছি মায়ের মমতার স্মৃতি। ভুলে যাই এদশের ধুলো-বালির মধ্যেই আমার অস্তিত্ব। আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হেবে। বাংলাকে নিজের মায়ের মত দেখতে হবে। জননী এবং জন্মভূমি আমাদের কাছে পরম শ্রদ্ধেয়া। জননী জন্মদাত্রী স্তন্যে-স্নেহে আমাদের লালন-পালন করে। আর জন্মভূমি আমাদের সবাইকে শস্যে ফলে অন্নে পানীয়ে পুষ্ট করে তোলে। তাই সেও আমাদের জননী। কবি গেয়ে ওঠেন, “তুমি মুখে তুলে দিলে, তুমি শীতল জলে জুড়াইলে, তুমি যে সকল সহা সকল বহা মাতার মাতা”। তাই জননীর কাছে আমাদের যেমন অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে অনুরুপ জন্মভূমির প্রতিও আমাদের সকলের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। আমাদেরকে সে কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। একটি দেশের মানোন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের জনতার উপর। দেশের নাগরিকের মধ্যে দেশ মাতার ভালোবাসা না থাকলে দেশ মাতা কখনো সাফল্যে ভরপুর হয়না। একটি দেশকে অগ্রযাত্রার দিকে ধাবিত করে দেশ মায়ের টান ও ভালোবাসায়। দেশ প্রেম একটি মানুষকে দেশের প্রতি আত্ম ত্যাগে উৎসাহিত করে। যদি কোন ব্যাক্তি তার দেশের প্রতি নিজেকে ঋনী না মনে করেন তাহলে তার সেই দেশের নাগরিক ও সে দেশের একজন সন্তান দাবি করাই বৃথা।কারন প্রতিটি মানুষের তার দেশের প্রতি সীমাহীন ঋন রয়েছে। আর তা কখনোই শোধ হবার নয়। দেশকে ভিন্ন দেশের নিকট মহিমান্বিত করে তোলার জন্য একমাত্র উপায় হলো স্বদেশে প্রেম। দেশপ্রেম হলো দেশের প্রতি ভালবাসা। কিন্তু আপনি আপনার দেশের জনগণকে ভালো না বেশে আপনার দেশকে ভালবাসতে পারবেন না। আমাদের শপথ করতে হবে না, তবে আমাদের একে অপরকে শক্তিশালী করতে হবে, আমাদের অবশ্যই সাধারণ সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে হবে, সবার ভালোর জন্য অমিল গুলো বাদ দিয়ে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে । আমাদেরকে আমাদের স্বরণীয় বরণীয় ব্যক্তিদের আত্মজীবনী শুধু লেখা পড়া ও বক্তৃতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের জীবনে তাদের চেতনা আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশের উপকারে যিনি নিবেদিত প্রাণ তিনিই প্রকৃত নাগরিক। পক্ষান্তরে দেশপ্রেমহীন আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি নিঃসন্দেহে অধমের সমান। সমাজ জীবনে প্রতিনিয়ত এহেন মূর্খের মত বিবেকবর্জিত অমানুষ দেখতেন বলেই হয়তো আমাদের পূর্বসুরি রাজনৈতিক নেতারা প্রথমে মানুষ হওয়ার কথাই বলতেন। কিন্তু পূর্বপুরুষদের মত আদর্শবান রাজনৈতিক নেতা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। তাই তাঁদের মূল্যবান কথাগুলো স্মরণীয় ও বরণীয় বাণীতে পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই নিজেদেরকে যতই লেখক, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক বা সচেতন নাগরিক হিসাবে দাবি করি না কেন, আমাদের উচিত হবে আমাদের চিন্তা-চেতনায় সে সব ব্যক্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখা, তাঁদেরকে স্মরণ করা। দেশের রক্ষক হচ্ছেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিকে বাহিনীর সদস্যরা। তাদের প্রথম ও একমাত্র কাজই হলো দেশকে ভালোবাসা। দেশটাকে নিজের মায়ের মত করে শ্রদ্ধা করা। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বহুলাংশে তাদের কর্মজ্ঞান ভুলে পথভ্রষ্ট হয়ে আছেন। নেতারা দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ও দলের স্বার্থকে বড় করে দেখছেন। যার প্রকৃত উদাহরণ ফুটে ওঠে হরতাল নামক ধ্বংসযঙ্গের মাধ্যমে। হরতাল অবরোধ দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক উপায় হলেও তারা নিজ দলের স্বার্থে রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে দেশের সম্পদ বিনষ্টে একটুও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তারা দলের স্বার্থ থেকে দেশে মাতার স্বার্থকে বড় করে দেখলে দেশে কোনো অরাজকতা থাকতো না। সবসময় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন হয় বলে সরকারি দল দাবি করলেও তারা যখন হেরে বিরোধী দল হয়ে যায় তখন কারচুপির অভিযোগ তুলেন। স্বাধীনতাত্তোর দেশের একটি নির্বাচনেও বিরোধী দল কর্তৃক সরকারি দলকে অভিনন্দন জানাতে দেখলাম না। আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে নতুন করে দেশপ্রেমের বীজ রোপন করতে হবে। রাজনীতিবিদদের সার্বিক কর্মকাণ্ডই উপরেই দেশের ভবিষ্যত নির্ভরশীল। তারা রাজনীতিকে ব্যবসা বা পেশা হিসাবে নয়, সেবা হিসাবে নিতে পারলেই দেশের বর্তমান ভয়াবহ অবস্থার অবসান হবে। দেশের মঙ্গলে দেশের সকল নাগরিকেরও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশকে প্রাণাধিক ভালবাসতে হবে এবং শুধু ভালবাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা, দেশসেবায় ব্রত হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম নয় কোনো নিছক বিমূত আদর্শ, নয় কতগুলো প্রাণহীন শব্দের সমাহার। আমাদেরকে সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে, জীবনকে ভালবাসি সত্য কিন্তু দেশের চেয়ে বেশি নয়।

 

লেখক
মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।
ইমেইল-tohaarafat1998@gmail.com
মোবাইল-01781704368

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া