সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

দেশ নিয়ে আমাদের যেভাবে ভাবতে হবে

ক্ষুদিরাম বসু একজন ভারতীয়-বাঙালি বিপ্লবী কিশোর যিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। মাতা-পিতাহীন শিশুটি বাঙ্গালী মায়ের পরিচয়ে বেড়ে ওঠেন। এই দেশের মাটিই ছিলো তার মা। নির্দিষ্ট ভূ-খন্ড নয় বরং সমগ্র ভারতবর্ষকে ছেলেটি নিজের সম্পদ বলে মনে করতেন। এদেশের সকল মানুষকে নিয়েই ছিলো তার পরিবার। তাইতো কিশোর বয়সেই তার ভূ-খন্ড ও পরিবারকে ইংরেজ বাহিনীর শোষণ পীড়ন থেকে রক্ষা করতে হাতে অস্ত্র তুলে নেন। সাড়া ফেলেছেন ব্রিটিশ মহলে। এমনকি ব্রিটিশদের ঘুমও হারাম করেছেন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন বয়সে ফাঁসির কাষ্ঠ বরণ করেন।

আমরা ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের গল্প জানি। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করলেও ব্যক্তি সুখকে বরণ না করে তিনি সমগ্র বাঙ্গালীর সুখ বরণ করতে চেয়েছেন। জ্বলে উঠেছেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা তিতুমীরের গল্প জানি। তিতুমীরের গল্প ও সাহসিকতার বয়ান তুলতে গিয়ে মুখে ফেনা তুলি। আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলার গল্প পড়তে পড়তে চোখে ছানি পেলেছি। মীর জাফরের নামটিকে গালি হিসেবে গ্রহণ করেছি। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে আদর্শ হিসেবে পেশ করি। তাজ উদ্দিন আহমদ, কামারুজ্জামান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও মনসুর আলীর গল্প শোনাই এবং তাদেরকে শ্রদ্ধা করি। আবার খন্দকার মোস্তাকের নাম শুনলেই মুখে থুতু পেলি মন ভরে ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা বলি। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে উচ্চতর গবেষণা করি। চেতনায় বুদ হয়ে যাই।মুখে মুখে বাংলা মায়ের জন্য জীবন বিলাই। বক্তব্য দিতে গেলে জ্ঞান হারিয়ে পেলি। কে কার থেকে বেশি চেতনাময়ী বক্তব্য উপস্থাপন করবো সে প্রতিযোগিতায় নেমে যাই।

দেশকে ভালোবাসা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। দেশ চেতনা আমাদের হৃদয়ের গভীরে সুপ্ত থাকে। দেশের ক্লান্তি, দুঃখ-দুর্দশা, দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে আমরা দেশের জন্য টান অনুভব করি। সে টান থেকেই ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার আন্দোলনে দেশের লাখো তরুণ অকাতরে নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে। মনীষী জ্যাকসন বলেছেন, ‘যে মায়ের সন্তান দেশের জন্যে জীবন দিয়েছে, তার মাতৃত্বের গৌরব চির ভাস্বর। দেশপ্রেম থাকা চাই বৈদেশিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্যে। ইতিহাস বার বার এটাই প্রমাণ করেছে যে, দেশপ্রেমিক জাতি শত্রুর কাছে কখনও পরাজিত হয় না। সে জাতির অন্তরে জ্বলতে থাকে দেশপ্রেমের আগুন অনির্বাণ শিখার ন্যায়। সারা পৃথিবীর মায়া-মমতা, স্নেহ সব একত্রিত করলেও যেমন মায়ের অকৃত্রিম স্নেহের সঙ্গে তুলনা করা যায় না তেমনি সারা পৃথিবীর ঐশ্বর্য-বৈভব ও সৌন্দর্যের সঙ্গে নিজ দেশের কোনো তুলনা হতে পারে না। কবি তার কাব্যে, দেশকর্মী তার সমাজসেবায়, গায়ক তার গানে, শিল্পী তার ছবিতে, বৈজ্ঞানিক তার বিজ্ঞান চর্চায়, শিক্ষক তার একনিষ্ঠ শিক্ষকতায় দেশপ্রেমের পরিচয় প্রদান করতে পারেন। কবি বলেছেন, ‘তুমি দেশকে যথার্থ ভালবাস তার চরম পরীক্ষা, তুমি দেশের জন্য মরতে পার কি-না।’ আমার দেশের ছেলেরা যুগে যুগে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা এদেশকে যথার্থ ভালোবাসে। তাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে তারা তৃপ্তির সহিত জীবন দিয়েছে।তাদের ভাবনা ছিলো আমার জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে আমার মত জীবন দিতে হবে না। মা-বোন ধর্ষিতা হওয়ার পরও হেরে যায়নি। তাদের ভাবনা ছিলো আমার ধর্ষিতা হওয়ার বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে এদেশে আর কাউকে ধর্ষিতা হতে হবেনা। বিধবার চিন্তা ছিলো আমার পর আর কাউকে বিধবা হতে হবেনা।

আফসোস যে আদর্শ আজ আমাদের মুখে মুখে। আমরা আমাদের বীরাঙ্গনা মায়ের স্বপ্ন, শহীদ ভাইয়ের চেতনা, বিধবা মায়ের আকুতিময় চাহনির মূল্য দিতে পারিনি। কথায় আছে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও তা রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের আজ বহিঃশত্রু নেই। আমরা নিজেরাই আজ নিজেদের শত্রু। রক্ষক আজ ভক্ষক। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রুটিরুজির উপকরণে পরিণত। জনগণকে চেতনার বড়ি খাওয়াইয়া নিজেরা নিজের মত করে দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছি। সর্বত্র দুর্নীতি। সরকারি অফিসের পিয়ন থেকে সর্বোচ্চ কর্তা পর্যন্ত প্রায় সবার বিরুদ্ধে দুর্নতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নন। দুর্নীতির এতোই ছড়াছড়ি যে, খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখি নৈতিক অবক্ষয়, অপহরণ, ছিনতাই, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিসহ নানান সমস্যা। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে যতই স্বপ্ন দেখাবার চেষ্টা করুক না কেন, আমরা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও তার কোনো সুফল দেখিনি।

রাজনৈতিক দল গুলো পরস্পরকে দোষারোপ করে কাঁদা ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে দেশের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছেন। সত্যিকার অর্থে আমাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বড়ই অভাব। এ কথায় কেহ বা মনোক্ষুন্ন হতে পারে, কেউবা বলতে পারে আমরা কি দেশকে ভালবাসি না? অবশ্যই আমরা সবাই দেশকে ভালবাসি। কিন্তু কিছু কিছু কুলাঙ্গার দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থটাকে অনেক বড় করে দেখে।যার ফলে দেশের আজ এই দুর্গতি।আমরা দেশটাকে নিজের করে ভাবতে ভুলে গেছি। দেশের মানুষকে নিজের আপন বংশের মানুষ মনে করতে ভুলে গেছি। নিজ পেটের ধান্ধায় সব ভুলে হিংস্র নেকড়ের রূপ ধারণ করেছি। আজ আমরা এতোই বেপরোয়া যে, যেন সুযোগ পেলে নিজ ভূখন্ডকে বিক্রি করে দিয়ে ইউরোপ আমেরিকায় গিয়ে অবস্থান নেই। নিজেকে নিজে ভালো রাখতে গিয়ে আমরা নিজেদের অস্তিত্বকে ভুলে গেছি। হারিয়ে পেলেছি মায়ের মমতার স্মৃতি। ভুলে যাই এদশের ধুলো-বালির মধ্যেই আমার অস্তিত্ব। আমাদেরকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হেবে। বাংলাকে নিজের মায়ের মত দেখতে হবে। জননী এবং জন্মভূমি আমাদের কাছে পরম শ্রদ্ধেয়া। জননী জন্মদাত্রী স্তন্যে-স্নেহে আমাদের লালন-পালন করে। আর জন্মভূমি আমাদের সবাইকে শস্যে ফলে অন্নে পানীয়ে পুষ্ট করে তোলে। তাই সেও আমাদের জননী। কবি গেয়ে ওঠেন, “তুমি মুখে তুলে দিলে, তুমি শীতল জলে জুড়াইলে, তুমি যে সকল সহা সকল বহা মাতার মাতা”। তাই জননীর কাছে আমাদের যেমন অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে অনুরুপ জন্মভূমির প্রতিও আমাদের সকলের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। আমাদেরকে সে কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। একটি দেশের মানোন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের জনতার উপর। দেশের নাগরিকের মধ্যে দেশ মাতার ভালোবাসা না থাকলে দেশ মাতা কখনো সাফল্যে ভরপুর হয়না। একটি দেশকে অগ্রযাত্রার দিকে ধাবিত করে দেশ মায়ের টান ও ভালোবাসায়। দেশ প্রেম একটি মানুষকে দেশের প্রতি আত্ম ত্যাগে উৎসাহিত করে। যদি কোন ব্যাক্তি তার দেশের প্রতি নিজেকে ঋনী না মনে করেন তাহলে তার সেই দেশের নাগরিক ও সে দেশের একজন সন্তান দাবি করাই বৃথা।কারন প্রতিটি মানুষের তার দেশের প্রতি সীমাহীন ঋন রয়েছে। আর তা কখনোই শোধ হবার নয়। দেশকে ভিন্ন দেশের নিকট মহিমান্বিত করে তোলার জন্য একমাত্র উপায় হলো স্বদেশে প্রেম। দেশপ্রেম হলো দেশের প্রতি ভালবাসা। কিন্তু আপনি আপনার দেশের জনগণকে ভালো না বেশে আপনার দেশকে ভালবাসতে পারবেন না। আমাদের শপথ করতে হবে না, তবে আমাদের একে অপরকে শক্তিশালী করতে হবে, আমাদের অবশ্যই সাধারণ সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে হবে, সবার ভালোর জন্য অমিল গুলো বাদ দিয়ে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে । আমাদেরকে আমাদের স্বরণীয় বরণীয় ব্যক্তিদের আত্মজীবনী শুধু লেখা পড়া ও বক্তৃতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে আমাদের জীবনে তাদের চেতনা আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

দেশের উপকারে যিনি নিবেদিত প্রাণ তিনিই প্রকৃত নাগরিক। পক্ষান্তরে দেশপ্রেমহীন আত্মকেন্দ্রিক ব্যক্তি নিঃসন্দেহে অধমের সমান। সমাজ জীবনে প্রতিনিয়ত এহেন মূর্খের মত বিবেকবর্জিত অমানুষ দেখতেন বলেই হয়তো আমাদের পূর্বসুরি রাজনৈতিক নেতারা প্রথমে মানুষ হওয়ার কথাই বলতেন। কিন্তু পূর্বপুরুষদের মত আদর্শবান রাজনৈতিক নেতা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। তাই তাঁদের মূল্যবান কথাগুলো স্মরণীয় ও বরণীয় বাণীতে পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই নিজেদেরকে যতই লেখক, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক বা সচেতন নাগরিক হিসাবে দাবি করি না কেন, আমাদের উচিত হবে আমাদের চিন্তা-চেতনায় সে সব ব্যক্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখা, তাঁদেরকে স্মরণ করা। দেশের রক্ষক হচ্ছেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিকে বাহিনীর সদস্যরা। তাদের প্রথম ও একমাত্র কাজই হলো দেশকে ভালোবাসা। দেশটাকে নিজের মায়ের মত করে শ্রদ্ধা করা। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা, সরকারি আমলা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বহুলাংশে তাদের কর্মজ্ঞান ভুলে পথভ্রষ্ট হয়ে আছেন। নেতারা দেশের স্বার্থ থেকে নিজের ও দলের স্বার্থকে বড় করে দেখছেন। যার প্রকৃত উদাহরণ ফুটে ওঠে হরতাল নামক ধ্বংসযঙ্গের মাধ্যমে। হরতাল অবরোধ দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক উপায় হলেও তারা নিজ দলের স্বার্থে রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে দেশের সম্পদ বিনষ্টে একটুও কুণ্ঠাবোধ করেন না। তারা দলের স্বার্থ থেকে দেশে মাতার স্বার্থকে বড় করে দেখলে দেশে কোনো অরাজকতা থাকতো না। সবসময় গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন হয় বলে সরকারি দল দাবি করলেও তারা যখন হেরে বিরোধী দল হয়ে যায় তখন কারচুপির অভিযোগ তুলেন। স্বাধীনতাত্তোর দেশের একটি নির্বাচনেও বিরোধী দল কর্তৃক সরকারি দলকে অভিনন্দন জানাতে দেখলাম না। আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে নতুন করে দেশপ্রেমের বীজ রোপন করতে হবে। রাজনীতিবিদদের সার্বিক কর্মকাণ্ডই উপরেই দেশের ভবিষ্যত নির্ভরশীল। তারা রাজনীতিকে ব্যবসা বা পেশা হিসাবে নয়, সেবা হিসাবে নিতে পারলেই দেশের বর্তমান ভয়াবহ অবস্থার অবসান হবে। দেশের মঙ্গলে দেশের সকল নাগরিকেরও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশকে প্রাণাধিক ভালবাসতে হবে এবং শুধু ভালবাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবেনা, দেশসেবায় ব্রত হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম নয় কোনো নিছক বিমূত আদর্শ, নয় কতগুলো প্রাণহীন শব্দের সমাহার। আমাদেরকে সোচ্চার কণ্ঠে বলতে হবে, জীবনকে ভালবাসি সত্য কিন্তু দেশের চেয়ে বেশি নয়।

 

লেখক
মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা
প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।
ইমেইল-tohaarafat1998@gmail.com
মোবাইল-01781704368

 

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে