সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে ‘কর্মসূচি পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন’ এবং ‘ইমার্জেন্সি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট’ নামে দুটি কমিটি গঠন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচি পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন সেলের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মুঈনুল ইসলাম। এছাড়া সদস্যরা হলেন- মোফাজ্জল হোসাইন সাদাত, রাকিব হাসান রাজ, মাসুদুর রহমান আদনান, ফারিয়া বিনতে রহমান, সুলতানা খাতুনে জান্নাত, আতিক শাহরিয়ার, নাজমুল হাসান, মো. আবু হাসনাত, মায়িদা ইকবাল শর্মী, আলাউদ্দীন মিনহাজ, ইসরাত জাহান নিহা, মো. ইসমাইল, আব্দুল্লাহ আল মাহাথির, মো. জুবায়ের হোসেন ও জাওয়াদ আহমেদ।
এছাড়া ইমার্জেন্সি ক্রাইসিস মেনেজমেন্টের সেল সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন হামযা মাহবুব। একই দিন রাতে সংগঠনটির ফেসবুক পেজে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সেলের অন্য সদস্যরা হলেন- মোহাম্মদ আরমানুল ইসলাম, মাহবুব-ই-খোদা, শেখ তারেক জামিল তাজ, মুহাম্মদ উসামা, সাঈদ আফ্রিদি, মো. হেলাল উদ্দিন নাঈম ও মো. ইমাম হোসাইন ইমন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দু’টি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ছাড়পত্রহীন অবৈধ ইটভাটা। এই ইটভাটায় কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট।
এছাড়াও ইটভাটার স্কুল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর আসা-যাওয়া এবং বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করে। ফলে ইটভাটার ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে ও শিক্ষার্থীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
উপজেলার যমুনা সেতু-ভূঞাপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী এলাকায় ভাঙার পাড় ব্রিজের উত্তরে বিবিসি নামে অনুমোদনহীন ইটভাটাটি গড়ে তোলা হয়েছে। এই ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকসহ মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের পাশেই আবাদি জমিতে এই বিবিসি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র পোড়ানো হচ্ছে ইট। চুল্লিতে কাঠ দিয়ে পোড়ানো কালো ধোঁয়ায় আশপাশ ছেয়ে যায়। ধুলোর আস্তরণ পড়ে বই ও বেঞ্চের ওপর।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন-২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এমন আইন থাকলেও সেটা না মেনে স্থাপন করা হয়েছে ‘বিবিসি’ ইটভাটাটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ইট পোড়ানোর চুল্লির ধোঁয়া, রাস্তার ধুলা এবং মালামাল আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক ও বাংলা ট্রলি গাড়ির শব্দে অতিষ্ঠ স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও আমরা। ধোয়ায় যেমন পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি আমরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি।
বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও বাগবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুল সংলগ্ন এই ইটভাটার কালো ধোঁয়া এসে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পরিবেশ নষ্ট করছে। এতে আমাদেরও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আমরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছি। স্কুলের কাছ থেকে এই ইটভাটাটি সরানো দরকার।
বাগবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, স্কুল সংলগ্ন এই ইটভাটার কারণে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহতের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টের ভুগছে। কয়েক বছর আগে স্কুলের পাশে এই ইটভাটাটি বন্ধে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেও তার কোনো প্রতিকার পায়নি।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ওই ইটভাটা বন্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২০২৪ সালে চার্জশিটও দেওয়া হয়।
খুচরা যন্ত্রাংশসহ ফ্রিজ, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, কম্প্রেসর ও মোটরবাইক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অর্জিত আয়ের ওপর ২০ শতাংশ প্রদেয় আয়কর নির্ধারণ করেছে সরকার।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, খুচরা যন্ত্রাংশসহ পূর্ণাঙ্গ ফ্রিজার, রেফ্রিজারেটর, মোটরসাইকেল, এয়ারকন্ডিশনার ও কম্প্রেসর তৈরির ক্ষমতাসম্পন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কেবল এই শিল্পের ব্যবসা থেকে অর্জিত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়কর হার ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। বর্তমানে এ ধরনের শিল্প তাদের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ কর দিচ্ছে।
প্রজ্ঞাপনে বেশকিছু শর্তের কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-
শিল্প প্রতিষ্ঠানটি কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর অধীন নিবন্ধিত হতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানটিকে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৬ এর উপধারা (৫) এবং (৬) অন্যান্য বিধানাবলি পরিপালন করতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব মোল্ড ও ডাইস তৈরির ক্ষমতা থাকতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব পলি ইউরিথিন ফোমিং প্ল্যান, পাউডার কোটিং প্ল্যান্ট এবং সক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টের ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানটি এনবিআরের অনুমোদিত হতে হবে এবং বিদ্যমান ব্যবসার পুনর্গঠন বা এইরূপ ব্যবসা বিভাজন দ্বারা গঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান অথবা বাংলাদেশে বিদ্যমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মেশিনারি অথবা স্থাপনা হস্তান্তরের মাধ্যমে গঠিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান হতে পারবে না।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে এনবিআর প্রদত্ত অনুমোদন প্রত্যাহার করতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বর্তমানে এসব শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের আয়ের ওপর ১০ শতাংশ এবং যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও উপকরণ আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দিচ্ছে। ২০৩২ সাল পর্যন্ত এটি বলবত থাকার কথা ছিল।
মোবাইলে কলরেট ও ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম যেখানে কমিয়ে আনার দাবি দীর্ঘদিনের, সেখানে আবারও বাড়তে যাচ্ছে গ্রাহকের খরচ। মুঠোফোন গ্রাহকদের সেবার ওপর আরও শতাংশ অতিরিক্ত সম্পূরক কর আরোপ করতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। শিগগিরই এ নিয়ে জারি করা হতে পারে নতুন প্রজ্ঞাপন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন সেবায় বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক সংযোজনের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। অনুমোদন মিলেছে দুটি মন্ত্রণালয় থেকেও। এখন শুধু অপেক্ষা প্রজ্ঞাপন জারির।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, বর্তমানে মোবাইলে ১০০ টাকার রিচার্জ করলে গ্রাহকদেরকে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ দিতে হয় ২৮ টাকা ১০ পয়সা। রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স দিতে হয় ৬ টাকা ১০ পয়সা, আর পরোক্ষ কর দিতে হয় আরও ২০ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ, গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে কর বাবদ তার থেকে কাটা পড়ে ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।
এ অবস্থায় সম্পূরক শুল্ক আরও ৩ শতাংশ বাড়ানো হলে গ্রাহকদের রিচার্জ বাবদ কর দিতে হবে ৫৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ বাবদ কাটা যাবে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ। রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স বাবদ কাটা যাবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং পরোক্ষ কর বাবদ কাটা যাবে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ, গ্রাহক তার মোবাইলে ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে তাকে কর দিতে হবে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা। ফলে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জে ব্যবহার করতে পারবেন মূলত মাত্র ৪৩ টাকা ৭০ পয়সা।
মোবাইল ফোন সেবায় দফায় দফায় খরচ বাড়ায় কমে যাচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক। ডাটা ব্যবহারের খরচে কাটছাঁট করছেন অনেকেই। ফলে, যোগাযোগপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার বদলে উল্টোপথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে দেশের মানুষ।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সবশেষ তথ্যানুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে মুঠোফোনের গ্রাহক ছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ, যা গত জুনের চেয়ে ৭৩ লাখ কম। অন্যদিকে জুনের চেয়ে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ৯৭ লাখ কমে ১৩ কোটি ২৮ লাখে নেমেছে।
মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা তলানিতে আছি। কিন্তু ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। যেখানে দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে, সেখানে নতুন করে উচ্চহারে করারোপ নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা বিমুখ করবে; নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।