‘সরকার নৃশংসতার সব সীমা অতিক্রম করেছে’
ফাইল ফটো
বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা আওয়ামী লীগের জন্য একটা কলঙ্কের তিলক চিহিৃত হয়ে থাকবে বলে মনে করছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
জোটের নেতারা বলেন, বিএনপির ১০ তারিখের সমাবেশকে বন্ধ করতে সরকার তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। একইসঙ্গে সরকার তার অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দমন-নীপিড়ন করে সন্ত্রাসের পথ বেচে নিয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য বর্তমান সরকার নৃশংসতার সব সীমা অতিক্রম করেছে। পুলিশ ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে বিরোধী দলের নিরীহ নেতা-কর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্ত্র করে গতকালের তাদের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে সরকার ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুণ বাগিছা নাগরির ঐক্যের অফিসের পাশে একটি মিলায়নতে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশ আমাদের সাংবিধানিক অধিকার বলে উল্লেখ করে মান্না বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব সেই সভা, সমাবেশের নিরাপত্তা দেওয়া। অথচ স্বৈরাচারী সরকার তার পেটোয়া বাহিনী তার দলীয় ক্যাডারদের সঙ্গে জনগণের উপর হামলা করছে। আমরা হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, প্রতিটি আঘাত, হত্যার বিচার করা হবে।
দেশের এই মহা সংকটময় মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে দায়িত্বশীর ও মানবিক আচারণ জনগণ প্রত্যাশা করে ও উল্লেখ করে মান্না।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর গুলি করে হত্যা, নৃশংস হামলা, বিএনপি এবং গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্দোলন শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজ করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের প্রতি গণতন্ত্র মঞ্চ সমর্থন জানাচ্ছে বলে জানান মান্না।
বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক খেলা হবে বলে আগ্রাসী এবং আক্রমনাত্মক রাজনীতি তৎপরতা শুরু করেছে, গতকাল কোনো উস্কানি ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা, আক্রমণ, লুট করা হয়েছে, মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এটা সরকার এবং সরকারি দলের খেলার অংশ হিসেবে হয়েছে। আমরা এই ঘটনাকে পরিকল্পতি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যায়িত করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার যে ভয় পেয়েছে, সেটাকে গণ আতঙ্কে পরিণত করেছে। বিএনপির অফিসে গতকালের হামলা জনগণের মধ্যে ভয় ধরিয়ে দেওয়া জন্য করেছে। সমাবেশের তিন আগে এই হামলা প্রমাণ করে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে এবং সরকারও এতটাই দেওলিয়া হয়ে গেছে একটি রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকেও তারা মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে না।
রাজনৈতিক ও নৈতিভাবে বিরোধী দলের অফিসে যেভাবে হামলা করেছে তা ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের জন্য একটা কলঙ্কের তিলক চিহিৃত হয়ে থাকবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই-এই হামলা-আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন সংকট সমধানের রাজনীতি দরকার সরকার সেই পথে না হেঁটে অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দমন করে সন্ত্রাসের যে নীতি গ্রহণ করেছে, দেশটাকে বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিএনপির অফিসের সামনে পুলিশ হামলা করে দুইজনকে হত্যা করেছে। আবার টেলিভিশনে মিথ্যা করছে, কার গুলিতে মারা গেছে? তারা নাকি শুধু মাত্র রাবার বুলেট মেরেছে। তাহলে এই লোক গুলো কীভাবে মারা গেল? পুলিশ সঙ্গে প্রাইভেট বাহিনীও যুক্ত হয়ে গুলি করছে। জার্সি পরে গুলি করছে গতকাল আমরা দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল একজন বিএনপির নেত্রী তার ছেলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আর্তনাদ করেছে, সেটা পর্যন্ত তারা শুনছে না। এই রকম একটা ভয়াবহ অমানবিক পরিস্থিতি সরকার তৈরি করেছে।’
বিএনপি এবং গণতন্ত্র মঞ্চ সামনে যুগপৎভাবে শীঘ্রই লড়াই শুরু করতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করে সাকি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ৬৯ এবং ৭১ তৈরি করেছে। মানুষ লড়ছে আগামী দিনেও ঐক্যবদ্ধভাবে লড়বে।
বিএনপির ১০ তারিখের সমাবেশকে বন্ধ করতে সরকার তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে বলে দাবি করেন সাকি।
বর্তমান রাজনৈতিক নিরসরে জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরির আহ্বান জানান গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নরুল হক নুর। তিনি বলেন, আর যদি পুলিশ দিয়ে রাষ্ট্র চালাতে চান, তাহলে প্রধানমন্ত্রীকে বলব আপনি পদত্যাগ করে, পুলিশ প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। আজকে এই দেশকে একটি পুলিশী রাষ্ট্রে কায়েম করেছেন।
পুলিশের একটি জোনের ডিসি একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিব সঙ্গে শিষ্টাচার বজায় রেখে কথা বলছেন না বলেও দাবি করেন নুর। তিন বলেন, আপনারা দেখেছেন কীভাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পুলিশের জুনিয়র অফিসাররা পেছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছেন। সিনিয়র নেতাদের সম্মান দিচ্ছেন না। এভাবে দেশ চলতে পারে না। আমরা বেঁচে থাকতে এভাবে দেশ চলতে দেব না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এমএইচ/এমএমএ/