এতদিন বিএনপি’র কোনো খবর ছিল না: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে এখন বিএনপি নেতাদের উঁকি দিতে দেখা যাচ্ছে কিন্তু করোনাকালে অসহায় মানুষের পাশে তাদের দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তর থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতদিন গ্রাম-গ্রামান্তরে তাদের কোনো খবর ছিল না। নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের ধীরে ধীরে দিনে-রাতে বিভিন্ন নিমন্ত্রণ-দাওয়াতে দেখা যাচ্ছে। তারা আবার মানুষের কাছে আসার চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদেরকে প্রশ্ন করতে হবে, যখন বন্যা হয়েছিল, আপনারা তখন কোথায় ছিলেন, করোনাকালে এক মুঠো চাল নিয়ে কেন মানুষের কাছে আসেননি?’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, কয়েক হাজার নেতা-কর্মী মারা গেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ সদস্যের মধ্যে উপদেষ্টামন্ডলীসহ ৫ জন সদস্য মারা গেছেন। আওয়ামী লীগের বহু এমপি মৃত্যুবরণ করেছে। করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, আবার সুস্থ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মারা গেছেন।’
ড. হাছান বলেন, ‘এই করোনাকালে রাঙ্গুনিয়াসহ সারাদেশে আমাদের নেতা-কর্মীরা কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে, সেই ধান আবার মাথায় তুলে কৃষকের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু অন্য কোনো দলকে দেখা যায়নি। যখন নির্বাচন আসছে, আমরা যেই কাজগুলো করেছি, সেই কাজ ভুল ধরার জন্য এখন তাদেরকে উঁকি দিতে দেখা যাচ্ছে। তাই আমি জনগণ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানাবো তাদেরকে প্রশ্ন রাখার জন্য-এতদিন তারা কোথায় ছিলেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজকে যখন দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। তখন দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছ।’
তিনি মাহমুদ বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সম্মেলনের মাধ্যমে আপনারা এমন নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন, যারা দু:সময়ে ছিল এবং দু:সময়ে থাকবে। পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থাকবে। নতুন নেতাকর্মীদের একটু সময় লাগবে।’
ড. হাছান, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালির সমস্ত আন্দোলন, সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত থেকেছে। বাঙালির সমস্ত অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের যে মহান স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধকালীন যে সরকার গঠিত হয়েছিল, যে সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম যিনি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, সেই সরকার ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের।’
শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হাশেম মাস্টারের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি. সামশুল আলম তালুকদার প্রধান বক্তা হিসেবে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম চিশতি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, এইচএন বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার প্রমুখ এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও শিলক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এনএইচবি/এমএমএ/