ভোট চুরি করাই তাদের অভ্যাস: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যে দল চেয়ারপার্সন করে বা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেয়, সেই দলকে জনগণ কেন ভোট দেবে? জনগণের ভোটের আশা তারা করে কিভাবে? তারা আসলে নির্বাচন চায় না। জনগণের কাছে ভোট চেয়ে নেওয়ার অভ্যাসই তাদের ছিল না বরং কেড়ে নেওয়া, চুরি করাই তাদের অভ্যাস ছিল।
বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর শপথ পাঠ করানোর পর তিনি এসব কথা বলেন।
গণভবন থেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে মেয়র আইভীকে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। এরপর কাউন্সিলরদের শপথ পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামায়াত বা অন্যান্য দল যারা নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করে থাকে তাদের প্রতিষ্ঠা কার হাত দিয়ে? অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত দিয়ে। জনগণের কাছে ভোট চেয়ে নেওয়ার অভ্যাসই তাদের ছিল না বরং কেড়ে নেওয়া, চুরি করাই তাদের অভ্যাস ছিল। তারা গণতন্ত্রের অর্থ বোঝে না, জনগণের অধিকারের অর্থও তারা বোঝে না। সেই শিক্ষাই তাদের নাই। তারা বোঝে সন্ত্রাস, তারা বোঝে দুর্নীতি, তারা বোঝে জঙ্গিবাদ, তারা বাংলাভাই সৃষ্টি করতে পারে তারা মানুষ হত্যা করতে পারে। একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যে দল চেয়ারপার্সন করে বা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেই দলকে জনগণ কেন ভোট দেবে। তারা ভোটের আশা করে কিভাবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের নেতৃত্ব কোথায়? তাদের তো নেতৃত্ব বলে কিছু নেই। একজন এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। আমরা তাকে ঘরে থাকার একটা সুযোগ করে দিয়েছি। আর একজন ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা এবং দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। সেই দুর্নীতির তথ্য শুধু আমরা না, আমেরিকার এফবিআই খুঁজে বের করেছে। সেই সব মামলা সাজাপ্রাপ্ত আসামি ২০০৭ সালে বা ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে গেছে যে, আর কোনো দিন রাজনীতি করব না। এই মুচলেকা দিয়েই দেশ থেকে চলে গিয়েছিল খালেদার ছেলে তারেক রহমান। এখন বিদেশেই সে থাকে।
নবনির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ কিন্তু এখন সচেতন, এটা মনে রাখতে হবে। কাজেই সেটা মাথায় রেখেই আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে আপনারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছে। জনগণ তাদের মনমত প্রার্থী নির্বাচিত করতে পেরেছে। এই জায়গা একটা সুযোগ, বাংলাদেশের মানুষ দেখুক। নারায়ণগঞ্জে একটা বিরাট দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো, যদিও আমাদের বিরোধীদল অনেক অপপ্রচার চালায় কিন্তু তারা কখনও আয়নায় নিজের চেহারা দেখে না।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে, আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ভোটের অধিকারে, আমরা বিশ্বাস করি জনগণ তার ভোট দিয়ে মনমত প্রার্থী নির্বাচিত করবে, যে তাদের জন্য কাজ করবে। জনগণ কখনও ভুল করে না, এটা হলো বাস্তবতা। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনটা খুব ভাল হয়েছে। ভোটে এটাই প্রমাণিত হয়েছে কে জনগণের জন্য কাজ করবে, সেটা তারা নিজেরা বেছে নিতে পারে। সেই বিবেচনা জনগণের আছে এবং জনগণের উপর সমস্ত আস্থা রেখেই আমরা আমাদের সব কাজ করি। আমাদের উন্নয়নের কাজগুলো যেন অব্যাহত থাকে সেটাই চাই।
এসএম/আরএ