যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে: ফখরুল
সরকার হটানোর ‘যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনে অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির (১০ দফা দাবি) সঙ্গে একমত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যে তারা লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন। এটা (যুগপৎ আন্দোলন) নিসন্দেহে অনেক বড় মাত্রা যুক্ত করেছে এবং জনগণকে আশ্বস্ত করেছে।’
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালযে ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
পথযাত্রা কর্মসূচিকে বিএনপির মরণযাত্রা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এরকম বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বোঝা যায় ওবায়দুল কাদেরের কিশোর কুমারের একটা গান মনে পড়েছে। ওখানে কিন্তু এটা আছে, মরণযাত্রা যেদিন যাবে। উনি নিজের চিন্তা করছেন কি না আমি জানি না।’
তিনি বলেন, আমরা পথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে এইটুকু বলতে পারি, আমাদের পথযাত্রার মধ্য দিয়ে একটা নতুন মাত্রা সৃষ্টি হলো এবং জনগণের মধ্যে একটা আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য রাজপথে নেমে আসার একটা নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।
‘রাজশাহীর সমাবেশ: রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যবহার’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এগুলো নিয়ে খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না। কারণ, বাই দিস টাইম, গোটা জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের সরকার ও তাদের যে চরিত্র, তাদের যে কর্মকাণ্ড সেটা খুব স্পষ্ট। তারা এদেশে সম্পূর্ণভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা সেটাই প্রমাণ করে। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পলিটিক্যাল পার্টি। তারা মুখে বলে একটা কাজ করে আরেকটা।’
তিনি বলেন, আপনি দেখবেন, সরকার আমাদের কর্মসূচির সময় আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট দেয়, তারা তিন দিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তার মধ্যে বসিয়ে মোবাইল টেলিফোন পর্যন্ত চেক করতে থাকে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশের ১৫ দিন আগে এখানে একটা বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। সেই অভিযানটা কী? তাদের ভাষায় বিভিন্ন মাদক দ্রব্য, বেআইনি জিনিসগুলো প্রতিরোধ করার জন্য হোটেলে-রেস্টুরেন্টে, মেসে-ছাত্রবাসসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল যে, তারা বিরোধী দলকে যেকোনো মূল্যে হোক বাধা প্রদান করবে। তাদেরকে তারা কোনোভাবে কর্মসূচি করতে দেবে না। অন্যদিকে ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর তারা (সরকারি দল) তাদেরটাকে বলতেই থাকবে, করতেই থাকবে এবং সেই ক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করবে।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমরা আগামী দিনে আন্দোলনকে কীভাবে আরও গতিশীল করার যায় তা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কথা বলেছি এবং একটি স্থির সিদ্ধান্তেরে দিকে অগ্রসর হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের কথা আমি বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, সারা দেশে এই ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী, এই অগণতান্ত্রিক সরকা্র বিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করাই আজকে আমাদের মূল লক্ষ্য। এ টু জেড সমস্ত সরকার বিরোধী শক্তি আজ মনে মনে, অন্তরে অন্তরে সংকল্পবদ্ধ এবং ঐক্যবদ্ধ।
আপনারা জানেন, আগামী ৪ তারিখে জোটের পক্ষ থেকে যে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সেদিন আমরা ঘোষণা করতে চাই আরো বৃহত্তর কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি সার্থক করা, বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
এমএইচ/এমএমএ/