বিএনপির ২৭ দফায় আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ: খসরু
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগ সরকার গভীর খাদে ফেলে দিয়েছে, এখান থেকে উদ্ধারে বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশ পরিচালনার জন্য এর বিকল্প বিএনপির সামনে নেই। এটি বাস্তবায়নে বিএনপির রাজনীতিবিদদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখায় আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপি ঘোষিত ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।
আমির খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে বিভক্তির রাজনীতি সৃষ্টি করেছে। বিএনপি শুধু স্মার্ট জাতিতে নয়, দেশকে রেইনবো ন্যাশনে পরিণত করতে চায়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে বিএনপি। পরিবর্তনের পর সংঘাতের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশকে এগিয়ে নিতে চায় বিএনপি। হামলা, মামলা ও নির্যাতনের রাজনীতি বন্ধ করা হবে।
আমির খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন কোনদিকে যাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে আছে। দেশ কোন পথে যাবে সেটা নিয়েও দ্বিধায় আছে। বিদেশিরাও উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্ট হয়ে গেছে। এই গভীর পদ্ধতি থেকে দেশ কীভাবে বের হবে? সেই প্রেক্ষাপটে কিন্তু আজকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। যার মূল উদ্যোক্তা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আজকে নব্বই শতাংশ রাজনীতিবিদ বক্স থেকে বেরিয়ে চিন্তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিজনেস মনে করে শুধু। কিন্তু বিশ্ব যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ভাবে না। সেই জায়াগাটা উপলব্ধি করেই কিন্তু তারেক রহমান এই রূপরেখা দিয়েছেন। যেমন তার বাবা জিয়াউর রহমান সাহসী কাজের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তার মা বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মাঝে স্বৈরাচার সরকার দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়।
খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশকে আবারো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। যা অনেক গভীরে চলে গেছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বিএনপি তুলে ধরেছে বলে সাধারণ মানুষ বলছে। বিদেশিদের কাছে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
আমির খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি শুরু হয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদে বসে আছে। তারা তো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজকে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা তো তারাই করছে। আজকে দেশের অর্থনীতি আওয়ামী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং পরিবর্তন দরকার। যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তারা সেখানে যাবেন। তখনই দেশের স্থিতিশীলতা আসবে।
রেইনবো নেশনের ব্যাখ্যা করে আমির খসরু বলেন, রেইনবো নেশন হলো— আজকে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে অনেক ধর্মের ও বর্ণের মানুষ বাস করে। সবার ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই ধারণা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। রেইনবো নেশন সারাবিশ্বকে বোঝায়।
পেশাজীবীদের তিনি বলেন, ২৭ দফা রূপরেখা বিএনপির আন্দোলনের অংশ। একে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে দিতে হবে। এটি নিরব আন্দোলন। পেশাজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এটি বোঝাতে পারলেই মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে।
আরএ/