সরকার পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে। আমি মনে করি, এই সরকার পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। চীনের মাও সেতুং একটা কথা বলতেন, আমাদের ওই শাসকগোষ্ঠির পতন অত্যাসন্ন। ও মারা গেছে মনে কর, কিভাবে দাফন করবে সেটা ঠিক কর। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন শুধু দিনের ব্যাপার। সময় গুনতে থাকবেন। এ রকম একটা পরিস্থিতি আসবে, যখন জনগন নামবে, দেশের অর্থনীতি খারাপ হয়ে যাবে-সব কিছু মিলে সরকারের পালাবার পথ থাকবে না। পালাবার পথ থাকবে না মানে পালানো ছাড়া উপায় থাকবে না, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ’২৮ অক্টোবর রাজনীতিতে হৃদয়হীনতা এবং বর্তমান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো কেমন হবে তা ব্যাখ্যা করে মাহমুদুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা বলেন কেয়ার টেকার সরকার তাই তো। আমি বলি, আমাদের জোট গণতন্ত্র এটাকে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কেয়ার টেকার সরকার মানে শুধু নির্বাচন করবে। কিভাবে ভালো নির্বাচন হয় তার কেয়ার করবে। এই সময়ের মধ্যে দেশে জিনিসপত্রের দাম এত বেশি সেই ব্যাপারে তারা কিছু করতে পারবে, এই সময়ের মধ্যে চুরি-ডাকাতি যদি হয়, এই সময়ের মধ্যে ১০টা মেয়েকে যদি ধর্ষণ করা হয় তাহলে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) করতে পারবে না কোনো ব্যবস্থা।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, যদি এ রকম হয় সরকার পড়ে গেছে কিন্তু পুলিশ যে রকম আছে সেই রকমই আছে। মনে করেন যে ভালো ভোট করতে পারবেন? পুলিশ এবং প্রশাসনকে এই সরকার যেভাবে পরিচিত করেছে যদি এটাকে ঢেলে সাজাতে না পারেন তাহলে ভোটও করতে পারবেন না ভালোভাবে। এই কারণে আমরা বলি অন্তর্বর্তী সরকার। যে সরকার সেই রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে, যাতে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়। যেনোতেনো প্রকারের একটা নির্বাচনের কথা বললে সত্যিকারভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। অতএব আমরা বলছি, ওই সরকারের (অন্তর্বতীকালীন সরকার) কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যান।
তিনি বলেন, বিএনপিও একটা কেয়ার টেকার সরকার চায়। সেই অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার জন্য আমরা যেন তৈরি থাকি এবং একটা সুন্দর গণতান্ত্রিক নির্বাচন করার জন্য যাতে সমস্ত অবস্থা তৈরি করি সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। শর্ত হচ্ছে- এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, এই নির্বাচন কমিশন থাকতে পারবে না, এই সংসদ বাতিল করতে হবে এবং ইভিএম চলবে না। এই কয়টা শর্তের কোনোটার সাথে কোনো কমপ্রোমাইজ নাই। আমরা প্রশাসনকে ঢেলে সাজাব, নির্বাচন করবার উপযুক্ত করব এবং দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি বলব, গণতান্ত্রিক জনতার জয় হবেই হবে।
বিএনপির সমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রসঙ্গ টেনে মান্না বলেন, বিএনপির সমাবেশে মানুষ জেগেছে। মানুষ আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিয়েছে এবং এরপরে বিএনপির যতগুলো সমাবেশ হবে আপনি লঞ্চ বন্ধ করেন, বাস বন্ধ করেন না লাঠি-সোঠা নিয়ে দাঁড় করেন, না ১৪৪ ধারা দেন কোনো কিছু টিকবে। নাউ টাইম হেজ কাম। সময় এসছে, মানুষ বিদ্রোহ করেছে। সরকার বলেছিল, বিএনপির পেছনে মানুষই না। বিএনপি দেখিয়েছে তাদের পেছনে মানুষ আছে, আওয়ামী লীগের পেছনে নাই। আমি শেখ হাসিনা সরকারের পতন দেখতে চাই। বিএনপি আরো বড় সমাবেশ করুক আমি খুশি হবো।
সংগঠনের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি এম সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া, জাতীয় পার্টির(কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, কৃষক দলের জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক ছাত্র নেতা ইসমাইল তালুকদার খোকন, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আমীর হোসেন বাদশা, আমির হোসেন আমুসহ প্রমূখ।
এমএইচ/এসআইএইচ