নতুন করে জেগে ওঠার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর শোভাযাত্রা করেছে বিএনপি। এই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে নতুন করে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে আমরা যখন স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্যাপন করছি, সে সময় আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা, এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া এ সরকারের কারাগারে আটকাবস্থায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। সেই সময় আমরা বিজয় র্যালি করছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আজকে বিজয়ের এ র্যালি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য, যুদ্ধ করেছিলাম একটি মুক্ত স্বদেশ পাব বলে। যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের বাক্স্বাধীনতা থাকবে, সংগঠন করার স্বাধীনতা থাকবে এবং আমাদের সন্তানদের জন্য একটি বাসযোগ্য ভূমি নির্মাণ করতে পারব। যেখানে গুম, খুন, হত্যা নির্যাতন থাকবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমরা কী অসহায় জাতি হয়ে গেছি!'
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ধ্বংস, ভোটের অধিকার, লেখার ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ র্যালি জনগণের নতুন করে জেগে ওঠবার র্যালি, এ র্যালি বাংলাদেশের মানুষের নতুন করে সংগ্রাম শুরু করবার র্যালি, এ র্যালি হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবার র্যালি।
নেতা-কর্মীদের সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার সুচিকিৎসা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, ৩৬ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করিয়ে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে র্যালির শুভ সূচনার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী বক্তব্যের পর বেলা আড়াইটায় মির্জা ফখরুল ইসলাম ও স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। বিজয়নগর, কাকরাইল, শান্তিনগর মোড় হয়ে সেটি আবার একই পথে কাকরাইল, বিজয়নগর নাইটিঙ্গেল মোড়, পল্টন, ফকিরের পুল মোড় হয়ে আবার নয়াপল্টনে গিয়ে শেষ হয়। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার প্রথম সারিতে ছিল জাতীয়তাবাদী মহিলা দল, এরপর মুক্তিযোদ্ধা দল, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখা, তাঁতি দল, মৎস্যজীবী দল, ওলামা দল, কৃষক দল ও শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা ঢাক–ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অংশ নেন।
শোভাযাত্রায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এনএইচ/এমএমএ/