আওয়ামী লীগের শনিবারের বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত আসতে পারে
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আগামী শনিবার (৭ মে) অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্তসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কাউন্সিল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ দিন পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য-নির্বাহী সংসদের সভা বসছে। কেন্দ্রীয় নেতা থেকে তৃণমূলকর্মী- সবার দৃষ্টি এখন এই বৈঠকের দিকে। দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও করণীয় নিয়ে নেতাদের কথা শুনবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণত অন্যান্য সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি নেতাদের কথা মন দিয়ে শোনার পর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। এবারও তাই করবেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতারা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে কারা
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, দলের কোষাধক্ষ্য ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যেদের আলোচনাক্রমে সভাপতিকর্তৃক মনোনীত ২৮ জন সদস্যসহ মোট ৮১ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ। আওয়ামী লীগের শাখাসমূহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই কার্যনির্বাহী সংসদ।
সভায় যে বিষয়গুলো গুরুত্ব পেতে পারে
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ এই সভায় বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে। তা ছাড়া কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন ও নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার কর্মকৌশল ঠিক হতে পারে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সবগুলো সহযোগী সংগঠনের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তাই এবারও জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গড়ে তোলা হবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলেরও নির্দেশনা আসতে পারে।
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলকে শক্তিশালী করাই এবারে কাউন্সিলগুলোর মূল লক্ষ্য। এ বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।
সহযোগী সংগঠনগুলোর কবে-কোনটার মেয়াদ পূর্ণ হবে
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহযোগী সংগঠন ৭টি। সেগুলো হলো- বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ,কৃষক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, তাঁতী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে গণ্য হবে।
তবে জাতীয় শ্রমিক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাদের স্ব-স্ব সংগঠনের গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হবে।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মতো সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদও তিন বছর মেয়াদী। তাই অনেক সংগঠনেরেই মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পথে।
ক্যাসিনো কাণ্ডের পর সহযোগী সংগঠনগুলোতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ যুবলীগের কাউন্সিল হয়। সেবার যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবলীগ গঠন করা হয়। একই দিন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগসহ আরও যেসব সহযোগী সংগঠন রয়েছে সেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে।
বৈঠক সম্পর্কে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ এদেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাক বা না থাক এটি এমন একটি দল দেশের বিভিন্ন জাতীয় ইস্যু নিয়ে সব সময়ই অ্যাকটিভ থাকে, তৎপর থাকে। কাজেই আমাদের কর্মকাণ্ড কখনই বসে থাকে না। এটা একটা ডায়নামিক রাজনৈতিক দল। সব সময় বিভিন্ন বিষয়ে তৎপরতা অব্যাহত থাকে। আমাদের সম্মেলন একটা রুটিন কাজ। তিন বছর পর পরই সম্মেলন করি। সম্মেলনও তিন বছর পরে হবে, তার জন্য যেসকল প্রস্তুতি দরকার ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র আপডেট করে যুগোপযোগী করার কাজ চলছে। সম্মেলনে দলের কাউন্সিলররা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।’
সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আগামী জাতীয় কাউন্সিলের আগেই দলের সকল পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। সহযোগী সংগঠনগুলোর যেগুলো মেয়াদপূর্ণ হয়েছে সেগুলো কাউন্সিলের আগেই নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। সামনে সময় বেশি নেই। মে, জুন, জুলাই তিন মাস। আগস্ট মাস শোকের মাস হওয়ায় আমরা অনেক কাজ বন্ধ রাখি। তাই হাতে সময় কম।
এসএম/এপি/টিটি