সামনে মহাবিপদ: রব
দেশে চলমান অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় ‘সামনে মহাবিপদ’ অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
বুধবার (২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় জেএসডি সভাপতি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। জেএসডির ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বৈরাচারের পতন ও রাষ্ট্র রূপান্তরে গণজাগরণ গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি বলে দিচ্ছি, সামনে মহাবিপদ। এই স্বৈরাচারি সরকার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গিয়ে জাতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাকে নৈরাজ্যকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। তিন মাস পরে টাকা দিয়েও খাবার পাবেন না এবং বাচ্চা শিশুর দুধ কিনতেও পারবেন না। সুতরাং এই অবৈধ সরকারকে উচ্ছেদ করা ছাড়া দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়ানো এবং অপশাসন থেকে মুক্তি সম্ভব নয়।
বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে বিরোধী রাজনৈতিক দলের গণসমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রতি ইঙ্গিত করে আ স ম রব বলেন, রাষ্ট্র পরিবর্তনের লড়াইয়ে রাজপথে নতুন গণশক্তির উত্থান ঘটেছে। রাজপথে যুবকদের, তরুণদের উত্থান ঘটেছে। আজকে বিভাগে বিভাগে মানুষ চাটাই নিয়ে, খড় নিয়ে, চিড়া-গুড় নিয়ে, পায়ে হেঁটে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী-ছাত্র-যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় ঘটাতে হবে এবং দ্রুত রাষ্ট্র রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
সরকারের উদ্দেশে রব বলেন, এরা যদি ভদ্রভাবে না সরে যায় পরে তারা পালাতেও পারবে না। যাদের তোমরা খুন করেছ, গুম করেছ তারা তোমাদের পালাতে দেবে না। তোমরা যা করছ, তোমাদের জাতি ক্ষমা করতে পারবে না। ক্ষমা করার কোনো অধিকার আমাদের নেই।
সাংবিধানিক কমিশন গঠন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগ ঢেলে সাজানো, গণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়া, পেশাজীবীদের ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন, খাদ্য সহায়ক তহবিল, চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন, দল নিরপেক্ষ পুলিশ ব্যবস্থা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের অংশীদারিত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ১০ দফা দাবিনামা তুলে ধরেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম এ নেতা।
রব বলেন, এসব কার্যকর করতে হলে আরেকটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। প্রস্তুত হোন। আমাদের বয়স শেষে, এই যুবক-তরুণ সমাজকে কাজ করতে হবে। জীবনবাজি রেখে ক্ষমতার পরিবর্তনে লড়াই করতে হবে, এই লড়াইতে জিততে হবে।
সভায় নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সানোয়ার হোসেন তালুকদার, সিরাজ মিয়া, তানিয়া রব ও শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এসএন